দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি: আয়কর ফাঁকির একটি মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দিয়ে আসামিদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত৷ প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়৷
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেঙ্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম, তার স্ত্রী আফরোজা বেগম, তিন ছেলে সাদাত সোবহান, সাফায়েত সোবহান ও সায়েম সোবহান এবং অডিটকারী প্রতিষ্ঠান কুদ্দুস অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্ত্বাধিকারী এমএম কুদ্দুসকে এ মামলায় সাজা দিয়েছিল বিচারিক আদালত৷ তবে হাই কোর্ট আসামিদের খালাস দিলে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আসে৷
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, কোম্পানিসহ এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমরা আপিলের অনুমতি পেয়েছি৷ আপিল বিভাগ ছয় দণ্ডিত ব্যক্তিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন৷
আদালতে বিবাদীপক্ষে পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আহসানুল করিম৷ আদেশের পর আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত বিবাদীদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন৷ সেখানে তারা জামিনের আবেদন করতে পারবেন৷
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ কর কমিশনার কবির উদ্দিন মোল্লা ২০০৭ সালের ২৫ জুলাই বিশেষ জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন৷মামলায় বলা হয়, বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেঙ্ লিমিটেডের তিন কর বষের্র হিসাবে তাদের আয় শূন্য দেখানো হলেও সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সময় প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে ২২ কোটি ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৮৮ টাকা আয়ের কথা জানায়৷
কুদ্দুস অ্যান্ড কোম্পানি নামের অডিট প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিবরণীতে এ দুই ধরণের তথ্য দেয়৷একই বছর বিশেষ জজ আদালত যে রায় দেয়, তাতে নিম্ন আদালত বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেঙ্ লিমিটেডকে দুই ধারায় ৩ ও ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়৷ এই দণ্ড একত্রে চলবে বলেও রায়ে বলা হয়৷তবে কোম্পানির কারাভোগ সম্ভব না হওয়ায় এর চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান এবং তিন পরিচালক আফরোজা বেগম, সাদাত সোবহান, সাফায়েত সোবহানকে এই দণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়৷
একইসঙ্গে তাদের আট কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়, তা না দিলে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে জানান বিচারক৷
পাশাপাশি সাংঘর্ষিক তথ্য দেওয়ায় অডিটকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারীকেও একই দণ্ড দেওয়া হয় এবং ওই তিন অর্থবছরে বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেঙ্ লিমিটেডের গোপন করা আয় বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত৷
আহমদ আকবর সোবহান এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে আপিল করেন৷ এর শুনানি করে একই বছর হাই কোর্ট সব আসামিকে খালাস দিয়ে দেয়৷ হাই কোটের্র ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ দুটি আপিলের আবেদন করে৷ তার শুনানি করেই সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার আপিলের অনুমতি দিল৷