timthumb.php

দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ৪ ফেব্রুয়ারি:৬ মাসেও সন্ধান মিলেনি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের বিঞ্চ বৈদ্যর কন্যা রিপা রায় ও তার পুত্র মিঠুন রায়ের৷ রিপার পরিবারের দাবি যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাদেরকে হত্যা করেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন৷ অপরদিকে একই দাবি করেছে স্বামী ও তার স্বজনরা৷ এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷

স্থানীয় লোকজন, পরিবারের অভিযোগ ও মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০১২ সালের মার্চ মাসে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের বিঞ্চ বৈদ্যর কন্যা রিপা রায়ের বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কিরন রায়ের পুত্র করম্নন রায়ের সাথে৷ বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে করম্নন রায়কে নগদ টাকা ও মালামালসহ প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল দেয়া হয়৷

রিপার বাবা বিঞ্চ বৈধ্য জানান, বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় যৌতুকের জন্য তার মেয়ে রিপাকে চাপ দেয় স্বামী করম্নন রায়৷ বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে অস্বীকার করায় শুরম্ন হয় নির্যাতন৷ এরই মধ্যে ২০১৩ সালে ফেরম্নযারি মাসে রিপার একটি পুত্র সনত্মন জন্ম নেয়৷ ২০১৪ সালের জুন মাসে রিপার স্বামী করন রায় ইজিবাইক কেনার জন্য বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা আনার জন্য পুনরায় চাপ সৃষ্ঠি করে৷ রিপা টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় তাকে বেদম মারধর করা হয়৷ জুলাই মাসে (২০১৪) এনিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ ওই সালিস বৈঠকে উপস্থিত মনমথ ফালিয়া, পরমেশ তালুকদার জানান, যৌতুকের জন্য রিপার উপর অমানবিক নির্যাতন করা হত৷ শত নির্যাতন সহ্য করেও রিপা স্বামীর ঘরে থাকতে চেয়েছিল মিমাংসা বৈঠকে কিছু দাবি পুরন করে স্বামীর বাড়ি পাঠানো হয়েছিল৷ রিপার বাবা আরো জানান, সালিসের সিদ্বানত্ম অমান্য করে পুনরায় যৌতুকের জন্য রিপাকে নির্যাতন করা হয় এবং এই মর্মে হুমকি দেয়া হয়েছিল, তোকে দিয়ে তোর বাবাকে শিক্ষা দেয়া হবে ৷

রিপার মা ময়না রানী জানান, ২০১৪ সালে ১ আগর্ষ্ট তার মেয় জামাতা করম্নন রায় বাড়িতে সংবাদ দেয় রিপা ও তার পুত্র মিঠন রায়কে পাওয়া যাচ্ছে না৷ সংবাদ পাওয়ার পর তারা খোজাখুজি করে মেয়ে নাতিকে না পেয়ে কোটালীপাড়া থানায় বিষয়টি লিখিত ভাবে অবহিত করেন ৷

পরবর্তীতে রিপার বাবা মাসহ পরিবারের সদস্যদের জব্দ করতে করম্নন রায় গোপালগঞ্জ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে ২০১৪ সালের ১ আগষ্ট শ্বশুর বিঞ্চু বৈধ্য,শ্বাশুড়ী ময়না বৈদ্যসহ ৫জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন৷ মামলায় বাদি উলেস্নখ করেন (করম্নন রায়) আসামিরা লোভী ভিকটিম রিপাকে তার দেয়া তিন ভরি সোনার গহনা ও ঘরে থাকা ইজিবাইক কেনার ২ লাখ টাকা নিয়ে পিতা মাতার সাথে বাড়ি চলে যান৷ সেই থেকে আসামিরা তার স্ত্রীকে আটকে রেখেছেন৷ এ মামলা দায়েরর দুই মাস পর নিখোজ রিপা রায়ের বাবা মেয়ে রিপা রায় নাতি মিঠুন রায়কে রিপার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন গুম ও হত্যা করেছে অভিযোগে এনে ৫কে আসামি করে ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর গোপালগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন৷ উভযের দায়ের করা মামলা দুটি বিচারাধীন রয়েছে৷ গত ৬ মাসেও সন্ধান মিলেনি রিপা ও তার সনত্মান মিঠিুন রায়ের৷

রিপার বাবা বিঞ্চ বৈদ্য, মা ময়না বৈদ্যসহ পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুন না পেয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন রিপা ও মিঠুন রায়কে হত্যা করেছে৷ রিপার স্বামী করম্নন রায় তার বিরম্নদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার শ্বশুর শাশুড়ীর তার স্ত্রীকে (রিপাকে) প্ররোচিত করে নগদ টাকা স্বর্নালংকার নেয়ার পর তাদের গুম ও হত্যা করেছে৷ এ প্রসঙ্গে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, আদালতের নির্দেশে মামলা রম্নজু করি৷ পূনরায় আদালতের নিদের্শে মামলার তদনত্মভার ডিবি পুলিশকে ন্যাসত্ম করা হয়েছে৷ আমার জানামতে তদনত্ম কাজ চলছে৷ শিশুসহ ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যহত আছে৷