0000

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে খাবার প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেছেন, এতে সরকারের বদনাম হচ্ছে। সরকারের উচিত, বাধা না দেওয়া।তিনি বলেন, সরকার যেটা করছে, সেটা উচিত না, অবৈধ। আমি মনে করি, এটা সরকারের জন্যও খারাপ হচ্ছে। সরকারের এতে সুনাম হচ্ছে না, বদনাম হচ্ছে।মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার বাসায় খাবার সরবরাহে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীর ডাকা প্রতীকী অনশনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বেলা ১১টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত সমিতির সভাপতির কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেছেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের উপায় হলো সংলাপ। পৃথিবীর যত জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটি সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে।

তিনি বলেন, সব সময় দেখবেন, পৃথিবীর সবখানে সংলাপ করে সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন জাতিসংঘ তারানকোকে পাঠাচ্ছে। কারণ, জাতিসংঘ বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থায় সরকার পক্ষ কোনো সমস্যা মনে না করলেও আমার কাছে সমস্যা মনে হচ্ছে। আমরা পয়লা ফাল্গুন পালন করছি। আবার ভ্যালেইন্টাইন ডে করছি। মানুষও পোড়াচ্ছি। এগুলো তো এক সঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস, অবরোধ-হরতাল এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলো বন্ধ না করলে সমাধান হবে না।বর্ষীয়ান এই আইনজীবী বলেন, সংঘাতও বন্ধ করতে হবে, আবার সংলাপও করতে হবে। শুধু দুই নেত্রী নয়, সুধী সমাজের সঙ্গেও কথা বলতে হবে।চলমান অবস্থার নিরসন করতে কে সংলাপের উদ্যোগ নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা সরকারে আছে, তাদের উদ্যোগ নেয়া উচিত। কারণ সরকারে যারা আছেন তাদের দায়িত্ব বেশি।

রফিক-উল হক বলেন, আমি খালেদার খাবার বন্ধ করা সম্পর্কে কথা বলবো। ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, নিজের ও নিজ পরিবারের স্বাস্থ্য ও কল্যাণের নিমিত্তে পর্যাপ্ত জীবন মানের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সামাজিক সেবামূলক কার্যাদির সুযোগ থাকবে।তিনি বলেন, এটা ১৯৪৮ সালের ঘোষণা। আর এখন ২০১৫ সালে এসে একজন লোকের খাওয়া বন্ধ করছি, তার সুবিধা অসুবিধা বন্ধ করছি। আমরা গণতন্ত্র-গণতন্ত্র করি, যদি সত্যিই আমরা গণতন্ত্র বুঝিয়ে থাকি আমরা জাতিসংঘের সদস্য, সে হিসেবেও এটা মানা আমাদের অবলিগেশন। আমাদের এবং সরকারের উচিত, বাধা না দেওয়া। সরকার যেটা করছেন সেটা উচিত না, অবৈধ।

রফিক-উল হক আরো বলেন, আমি মনে করি, এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে সরকার এসব বন্ধ করবেন। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেবেন। অস্বাভাবিক জীবন যাপন করলে অস্বাভাবিক প্রডাক্ট হয়।পরে তিনি সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেনকে পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান।এর আগে সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নিয়ম রক্ষার নির্বাচনের পর আমরা এক বছর অপেক্ষা করেছি। সরকার বলেছে, আমাদের আন্দোলন করার সাহস শক্তি নাই। এখন সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ডাক দিয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) চুপচাপ বসে আছেন। তার একটি বাক্যে সারা বাংলাদেশ কাঁপছে। সরকার বেসামাল হয়ে গেছে।অনশন কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক সাইদুর রহমান, বদরুদ্দোজা বাদল প্রমুখ।