পরিকল্পনামন্ত্রী

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৮ মার্চ: সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের গুণগতমান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।রোববার রাজধানীর আগারগাঁও পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সব মন্ত্রনালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং প্রধানদের সাথে এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।মন্ত্রী এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নে সব ধরনের অপচয় রোধের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হলে প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি পাবে না। সময় বৃদ্ধি না হলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যায়। এতে অপচয় এমনিতেই হ্রাস পায়।বৈঠকে চলতি অর্থবছরে ৫৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট ১২৮৭টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিপ্রকৃতি ও গুণগত মান বজায় রাখার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তÍ খান, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হুমায়ুন খালিদ, আইএমডির সচিব শহিদ উল্লাহ খান ও পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আজম বক্তব্য দেন।বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘উন্নয়ন বাজেটে অর্থ অপচয় কমাতে হবে। প্রবৃদ্ধিবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের চলমান সহিংসতা এখনও সামষ্টিক অর্থনীতিতে সেভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেনি।আগামী অর্থবছর কি ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, এ বিষয়ে ধারনা দেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। একই সাথে শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তথ্য প্রযুক্তি খাতভিত্তিক প্রকল্পে আমরা বিনিয়োগ করবো। এ তিনটি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করছি। এ ছাড়া দারিদ্র বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে অধিকসংখ্যক প্রকল্প নেয়া হবে।

তিনি বলেন, এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ একদিকে দেশ যেমন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে তেমনি গড়ে উঠবে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি ও প্রযুক্তিভিত্তিক তথ্য ভান্ডার।মন্ত্রী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রকল্প হাতে নিতে হবে। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, আমরা এমন প্রকল্প হাতে নেব যেখানে স্বল্প বিনিয়োগে বেশি সুফল পাওয়া যায় এবং অর্থনীতিতে বহুমুখী ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাহলে অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং কর্মসংস্খান তৈরি হবে। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে।প্রকল্প বন্টনের ক্ষেত্রে দেশের কোন অঞ্চল যেন বঞ্চিত না হয়, এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রকল্পের সুষম বন্টন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। উপকূলীয়, নদী ভাঙন, হাওর-বাওড়, পার্বত্য ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ সব অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আমাদের আরো প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।