02
দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ এপ্রিল: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে তিতৃয় বারের মত হামলার শিকার হয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।বুধবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রুবেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা চালায়।এসময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। একই সময় তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে খালেদা জিয়ার গাড়ির বাম দিকের কাঁচ পুরোটি ভেঙ্গে গেছে। ড্রাইভার পর্যন্ত আহত হন। এতে খালেদা জিয়ার এক নিরাপত্তা কর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

DoinikBarta_দৈনিকবার্তা 60453877298450_8301446855100145926_n

দ্রুত গতিতে খালেদা জিয়ার গাড়ি সটকে না পড়লে খোদ খালেদা জিয়ার প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।হামলায় দুই সিএসএফ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) শামিউলের অবস্থা গুরুতর অপরজন সিএসফ আতিক, তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।জানা যায়, খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বাংলামটর এলাকা পার হওয়ার সময় শতাধিক নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এ সময় তারা বহরে থাকা বেশিরভাগ গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে। এসময় খালেদা জিয়ার গাড়ি ছাড়াও আরো দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িরও দুটি কাঁচ ভেঙে গেছে। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা গাড়ি লক্ষ্য করে বৃষ্টির মত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন চালক আহত হয়েছেন।

তাদের চোখেমুখে রক্তের দাগ দেখা গেছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়োজিত (সিএসএফ) এ কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) শামিউলকে ক্ষমতাসীনরা গাড়ি থেকে নামিয়ে বেদম মারধর করতে থাকে। পরে বাংলামটরের ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করেন।এরপর খালেদা জিয়াকে নিয়ে গাড়ি সরাসরি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যায়। এখন সেখানে সবাই অবস্থান করছেন এবং আহতরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। নয়াপল্টন এলাকায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হয়েছেন।এরপর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হেয়ার রোড হয়ে কাকরাইলে দিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যায়। সর্বশেষ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।এর আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলা সত্ত্বেও টানা পঞ্চম দিনের মতো দল সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

03

বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে গাড়িবহর নিয়ে বের হন তিনি।গত শনি, রবি, সোম ও মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জনগণের কাছে গিয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের জন্য ভোট চান খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের মধ্যে প্রার্থীর মার্কা ও ছবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।এর মধ্যে রবিবার উত্তরায় প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বাধার সম্মুখীন হন। পরে তাদের বাধাকে উপেক্ষা করে তিনি প্রচারণা চালান।সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের বাস প্রতীকে ভোট চাইতে গিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন খালেদা জিয়া।হামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-গ-১৩২৬১২) গ্লাস ভেঙে যায়। এছাড়া তার নিরাপত্তা টিম-সিএসএফের চারটি গাড়িসহ অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় চার সিএসএফ সদস্যসহ অন্তত ১১ জন আহত হন।সর্বশেষ মঙ্গলবার রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী মির্জা আব্বাসের মগ প্রতীকের প্রচারণায় গিয়ে হামলার শিকার হয় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর।