DoinikBarta_দৈনিকবার্তা tofaila1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ এপ্রিল: জনগণ নীরব বিপ্লবের মাধ্যমে নাশকতাকারী বিএনপিকে বর্জন করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ।বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর: হারমোনিয়াস সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি বিএনপির পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিশ^বাণিজ্যে সার্কভুক্ত দেশসমুহের অবদান কম। বাংলাদেশ চায়না-ইন্ডিয়া-মিয়ানমার (বিসিআইএম) যোগাযোগ স্থাপন হলে এই বাণিজ্যের পরিমান অনেক বেড়ে যাবে। বিসিআইএম এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক সুবিধা সৃষ্টি করবে।অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাণিজ্য ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। গত বছর বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৩২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, চলতি বছর রপ্তানি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। বিসিআইএম কার্যকর হলে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আরো অনেক বেড়ে যাবে। প্রতিবেশি দেশগুলোর সাশে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়বে। বিসিআইএম বাস্তবায়নের ফলে বাণিজ্যিক ভাবে বাংলাদেশ অনেক লাভবান হবে।মন্ত্রী বলেন, বিশ^ অর্থনৈতিক শক্তিতে চীনের অবস্থান দ্বিতীয় এবং ভারতের অবস্থান তৃতীয়। এ দু‘টি দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বেশি। শিল্পের কাাঁচামাল আমদানীর কারনেই এ দু‘টি দেশের সাথে বাংলাদেশের ঘাটতি বাণিজ্য রয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারত ও চীন বাংলাদেশকে বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। বিসিআইএম কার্যকর হলে এ বাণিজ্য ঘাটতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগি। চীনের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্্েযছ। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতকে সহায়তা করতে মুন্সিগঞ্জ জেলার বাউসিয়ায় তৈরী পোশাক পল্লী নির্মাণ, পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা ক্যাম্পাস এবং কর্নফুলি টারেলেরমতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চীনকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ করে দিচ্ছে। এতে বাংলাদেশে চীনের শিল্প খাতে বিনিেিয়াগ অনেকগুন বেড়ে যাবে।তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারত সরকারও বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন নেশাদ্রব্য ও অস্ত্রছাড়া বাংলাদেশের সকল পণ্য ভারতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে।অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিসিআইএম কার্যকর হলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভুতপূর্ব উন্নতি হবে এবং বাংলাদেশ ব্যবসায়িক ভাবে উপকৃত হবে। প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। চীন ও ভারতেরমতো বৃহত বাণিজ্য সমৃদ্ধ দেশের সাথে সংযুক্তির ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশিদার হতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বিসিআইএম কার্যকর হলে এ অঞ্চল অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালি হবে, নতুন বিনিযোগের সূচনা হবে। বাণিজ্য, এনার্জি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। আঞ্চলিকায়ন জোড়দার করতে হবে, এ জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তিনি বলেন, বিসিআইএম যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হলে এ অঞ্চলের উন্নয়নের দ্বার খুলে যাবে। এ জন্য পারস্পরিক বিরাজমান সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে, পারস্পরিক বিশ^াস অর্জন করতে হবে, ভিসা সহজ করতে হবে, জনশক্তি ও পানি সমস্যার সমাধান করে শিল্পায়ন ও পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াস, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার সঞ্জিব চক্রবর্তী, এফবিসিসিআই সভাপতি ও বিসিআইএম বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারের প্রেসিডেন্ট গোলাম দস্তগীর গাজী, বাংলাদেশ-মায়ানমার চেম্বারের সভাপতি কে বি আহমেদ খেন বক্তব্য দেন।অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেজবাহ কামাল।