DoinikBarta_দৈনিকবার্তা _

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ মে: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকা সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শারম্যান।শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫ টা পযর্ন্ত গুলশান-২ এ খালেদার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটও ছিলেন। তবে অংশ নেননি ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা ওয়েন্ডি শেরম্যানের কাছে সিটি নির্বাচনে ভোট কারচুপিসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।এ সব অভিযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণও তিনি দিয়েছেন বলে বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি শেরমান শুক্রবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসায় যান। আধা ঘণ্টার কিছু বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন তিনি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারির আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক পরিস্থিতি কোনো কিছুই বাদ যায়নি।

সদ্য অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচন ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাদের কয়েকজনকে বরখাস্ত করার বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠে আসে।সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সরকার-নির্বাচন কমিশন-শাসকদলের যৌথ উদ্যোগে ভোট কারচুপি, বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের ওপর সরকারের নিপীড়ন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বরখাস্ত করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়াবলীর ওপর তথ্য প্রমাণাদিও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির কাছে উপস্থাপন করা হয়, বলেন মঈন খান।বৈঠকে মঈন খান ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট বৈঠকে ছিলেন।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শীর্ষ কর্মকর্তা শেরমান। দুই দিনের সফর শেষে সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন তিনি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সম্প্রসারণের জন্য ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর অংশীদারিত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের আগে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শেরমান। গুলশানে রওশনের বাসায় যান তিনি।মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ওয়েন্ডি শেরমান এমন এক সময়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, যে সময়টি বাংলাদেশের রাজনীতির গতিধারার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনটি সিটি নির্বাচন হয়ে গেছে। গণমাধ্যমে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছে, ওই নির্বাচনের রহস্য কারো অজানা নয়। বেগম জিয়ার সঙ্গে শেরমানের বৈঠকে এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মঈন বলেন, তারা (ওয়েন্ডি শেরমান) কী বলেছেন, তা তারা বলবেন, যা দূতাবাস থেকে বিবৃতি আকারে দিয়ে থাকে।আমরা এ বিষয়ে কিছু বলছি না। সিটি নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার উদ্বেগ বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে।

বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের পর গত মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট হয়।তিন সিটিতেই প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে প্রচারে নামে বিএনপি, যার মধ্য দিয়ে বছরের শুরু থেকে চলতে থাকা অবরোধের সমাপ্তি ঘটে।বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা-শারম্যান বৈঠকে যথারীতি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া তিন সিটি করপোরেশন নির্বচন নিয়েও খালেদ-শারম্যানের মধ্যে কথা হয়েছে। তবে কী কথা হয়েছে সেটি মিডিয়াতে বলা সমীচীন মনে করছি না,’ যোগ করেন ড. মঈন।