full_1139225247_1432113650

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ মে: বর্ষবরণ উৎসবে যৌন নিপীড়নে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং ওই ঘটনার প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতেও বাধা দিয়েছে পুলিশ।বুধবার প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যর ডাকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসি হয়ে দোয়েল চত্বরের কাছে শিশু একাডেমির সামনে পৌঁছে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়েন।

এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা ব্যারিকেড সরিয়ে এগিয়ে গেলে হাই কোর্ট মোড়ে পুলিশ আবার বাধা দেয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান তারেক বলেন, যৌন নিপীড়কদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। যাদের বিচারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি তারাই আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এভাবে আন্দোলন দমানো যাবে না।ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সোহেল অভিযোগ করেন, খোদ পুলিশই ‘নিপীড়নে জড়িত।সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু বলেন, যৌন নিপীড়কদের ধরতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা যখন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি তখন মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।সমাবেশ শেষে হাই কোর্ট থেকেই মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান বিক্ষোভকারীরা।

পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণের দিন টিএসসি এলাকায় নারীদের যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গত ১০ মে মহানগর পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে। কয়েকজনকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর পাশাপাশি বুট দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায় পুলিশকে। একই সময় কয়েকজন নারীকর্মীকে ধাওয়া করে ফেলে পেটাতেও দেখা যায়।ইসমত জাহান জো নামে এক নারীকর্মীকে চুল ধরে ফেলে দিয়ে পেটানের ছবি গণমাধ্যমে এলে ব্যাপাক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। ওই ঘটনায় মো. আনিস নামে এক পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। (বুধবার) আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা না হলে আগামীতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করবো।

নববর্ষে টিএসসিতে নারীর যৌন হয়রানির ঘটনার অদ্যবদি কোনো দৃশ্যমান বিচারের ব্যবস্থা করতে না পারায় বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার মুখে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান এবং সেখানকার সমাবেশে এ কথা বলেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট নেতারা।এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাস ঘুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা দেয়। মিছিলটি কার্জন হলের সামনে এসে প্রথম ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। পরে তারা ব্যারিকেডটি ভেঙে পুনরায় সামনে এগোতে থাকে। এরপর হাইকোর্ট মোড়ে তাদেরকে আবারো বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশি বাধায় তারা এগোতে না পেরে সেখানেই সমাবেশ করে।

৪সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি হাসান তারেক বলেন, ছাত্রজনতাকে কখনো আটকে রাখা যায় না। আজকে ছাত্রজনতা কার্জন হলের সামনের ব্যারিকেড ভেঙেছে। তারা জানে কিভাবে দাবি আদায় করতে হয়।তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে এবং দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি না করলে আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করার হুমকি দেন।সমাবেশটি দুপুর দেড়টায় তাদের আজকের কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করে ঢাবির দিকে রওনা দেয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লাকী আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি লিটন নন্দী, বিপ্লবী ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখা সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার প্রমুখ।