DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_1370_380031

দৈনিকবার্তা-বগুড়া , ১২ জুন: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে পূর্ব বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে শত শত হেক্টর জমির উঠতি পাটের ফসল পানিতে ডুবে গেছে। পানির বৃদ্ধির কারণে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ আগাম বন্যার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করছেন। এছাড়াও সেই সাথে যমুনা নদীর ব্যাপক ভাঙনে এরই মধ্যে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর চরাঞ্চলসহ বি¯তৃণ এলাকায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা পাটের ফসল করে থাকে। কারণ পাট ফসল চাষ করে লাভবান হওয়ায় বহুবছর আগে থেকে এ এলাকার চাষীরা চৈত্র মাসের শেষের দিকে জাত পাটের বীজ জমিতে বোপন করে। এ বছর উপজেলায় সাত হাজার আটশ পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করা হয়েছে। আষাঢ় মাষের মাঝামাঝি সময়ে এ পাট যখন আট নয় ফুট লম্বা হয় তখন তা কর্তন করে থাকে। কিন্তু এবার কৃষকদের সেই আশা নিরাশ হতে শুরু করেছে। নিচু এলাকার অধিকাংশ পাটের জমিতে তিন চার ফুট করে পানি ঢুকে পড়ায় অকালে এসব পাট কাটতে শুরু করেছে। এছাড়াও ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শত শত বিঘা জমির উঠতি পাটের ফসল পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এরইমধ্যে যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানের নিচু এলাকায় বন্যা অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ করে চন্দনবাইশা ইউনিয়নের শেখপাড়া, চন্দনবাইশা, নওখীলা ও ঘুঘুমারি এলাকায় শুক্রবার পর্যন্ত শতশত মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পানিবন্দী মানুষেরা স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, রাস্তাঘাট ও উঁচু স্থানে নতুন করে মাথা গোজার জন্য ঘরদরজা তুলতে শুরু করেছে। এছাড়াও চন্দনবাইশা, নওখীলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নওখীলা পিএন উচ্চ বিদ্যালয়, নিজ চন্দবাইশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চন্দনবাইশা আয়েশা ওসমান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের দুই তিন ফুট করে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বৃহস্পতিবার থেকে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, আগাম বন্যায় উপজেলার যমুনা নদীর নিচু চর এলাকার পাটের জমিতে বন্যার পানিতে আক্রান্ত হয়েছে খবর পেয়েছি তবে কি পরিমাণ জমিতে পানি উঠেছে সে তথ্য এখনো আমার হাতে আসেনি।অপরদিকে গত পহেলা মে থেকে বড়ইকান্দি থেকে শুরু করে কামালপুরের দড়িপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের ৬০ ভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৪০ভাগ কাজ সম্পর্ণ করা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারিয়াকান্দি এলাকার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জানান, আগাম বন্যা হবে আগে আমরা কখনো ভাবিনি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে বাঁধ নির্মাণ সম্পর্ণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।