bnp

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জুন: বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)সদস্য অপহরণের ঘটনা জাতির জন্য লজ্জা বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। এছাড়া ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে যেন অপমানজনকভাবে তুলে নিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বিজিবিকে পেশাগতবাবে সক্ষম করে তোলার জন্যও সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি।নয়াপল্টনে শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি করেন।তিনি বলেন, আমাদের বিজিবির নায়েক আবদুর রাজ্জাককে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অপহরণ করেছে। তার প্যান্ট খুলে লুঙ্গি পরিয়ে হাতকড়া পরা একটি ছবি আমরা ফেইসবুকে দেখলাম, যা মিয়ানমারের পত্রিকায় ছেপেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার।

আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যায়।তিন দিন আগে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে দুই বাহিনীর গোলাগুলির পর নায়েক রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপি।ভুল বোঝাবুঝির’ কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিজিবি ও স্বরাষ্ট প্রতিমন্ত্রী বললেও এখনও নায়েক রাজ্জাককে ছাড়েনি মিয়ানমার; যদিও ঘটনার পর ঢাকায় তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে বিজিবি সদস্যকে ছাড়াতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।বিএনপি নেতা রিপন বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব, অনতিবিলম্বে আবদুর রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনা হোক।আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে দক্ষভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে না। তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

দলের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দাবি করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন,এখন মাঠে কিন্তু কোনো আন্দোলন নেই, রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। তা সত্ত্বেও আমাদের নেতারা বিশেষ করে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ কারাগারেই রয়েছেন।এটা দুঃখজনক।রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি বাংলাদেশে অতীতে দেখা গেলেও এবার সরকারের আচরণে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

আর হানাহানি নয়, বিভেদ নয়। রাজনৈতিক কারণে আমরা একে অপরের বিরোধিতা করব, সমালোচনা করব। তবে তা যেন প্রতিহিংসামূলক না হয়, অন্য কোনো রাজনীতি দলকে ধ্বংস করার জন্য না হয়।রমজান মাসের কথা বিবেচনা করে সরকার বিরোধী নেতাদের মুক্তি দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়ার পাশাপাশি খাদ্যপণ্যে ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান রিপন।

সরকারের তরফ থেকে যে ভেজালবিরোধী অভিযান হয়, তা কার্য্ত চলছে না। এতে মানুষজন ও রোজাদাররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা অবিলম্বে ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদারের দাবি জানাচ্ছি।রাজার সময়ে সরকারের বাজার তদারকি ব্যবস্থা জোরদারের দাবিও জানান তিনি।বাণিজ্যমন্ত্রী তার কথা রাখতে পারেননি। এখনও সময় আছে, তিনি যদি কঠোর হন, তার প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সক্রিয় হয়, তাহলে রোজাদার জন্য রোজা অনেকটা প্রতিপালন সহজ হতে পারে।আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল ও সরকার মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল ।

দেশে একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তি দিয়ে আন্দোলন কার্যত স্তব্ধ করে দিয়েছে। তারা এতে সফলও হয়েছে।তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে সরকার বিরোধীদলের নেতাদের আটক করে। আন্দোলন শেষে নেতাকর্মীরা কারাগার থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিচ্ছে না । সরকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি মানছে না। অথচ বর্তমানে আমাদের সরকারবিরোধী কোন আন্দোলন কর্মসূচি নেই। আমরা সেই সংস্কৃতি আবার শুরু করতে চাই এবং তা রোজার মাস থেকেই। এরই অংশ হিসেবে আমাদের দলের চেয়ারপারসনের ইফতারের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আমরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে গিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শাহজাহান মিলন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রফিক শিকদার, সুলতানা আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।