OLYMPUS DIGITAL CAMERA

দৈনিকবার্তা-কুষ্টিয়া(ভেড়ামারা), ০৭ জুলাই ২০১৫: টানা বর্ষনের পর মন্দা কাটিয়ে প্রাণ ফিরেছে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা’র ঈদ বাজারে। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে খুশির দিন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ধনী, গরীব, মধ্যবিত্ত এমনকি ছিন্নমূল পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে কেনাকাটার আয়োজন। নতুন পোষাকের ভাঁজ খুলে ঘ্রাণ না নিলে যেন অধঁরায় থেকে যায় ঈদ আনন্দ। তাই সাধ্য মত পরিবারের সকলে মিলে নতুন পোশাকে সাজতে ঘরে ঘরে চলছে জোর ঈদ প্র¯ু—তি। ক্রেতারা বলছে, বর্ষার সময় এহেন অনুকুল পরিবেশ হয়ত আর পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই এখনি কেনাকাটা কাজটুকু শেষ করা হচ্ছে।

রমযানের অর্ধমাস বাজারে ঢিলে-ঢালা বেচা-বিক্রি চললেও এখন দোকানীদের দম নেওয়ার সময় নেই। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বিরতিহীন বেচাকেনা। ভেড়ামারা বাজারের প্রতিটি অলি গলিতে ক্রেতাদের ভিড়ে তিল ধরনের পা ফেলার জায়গা নেই। ভেড়ামারা বাজার ঘুরে দেখা যায় হিন্দি সিনেমা, ভারতীয় বাংলা সিরিয়য়াল ও হিট ছবিগুলোর কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম নিয়ে বাজার সেজেছে বাহারী পোষাকের রকমারী আয়োজন।

মেয়ে ক্রেতাদের পছন্দ তালিকায় অধিক সমাদর পাচ্ছে জিসম ২, কিরন মালা, বর্জমালা, কটকটি, অকশোরা, ঝিনুকমালা, পাখি, তুতুল নামের বাহারী পোষাক গুলো। ছেলেদের পোষাকের মধ্যে প্রাধান্য পাচ্ছে পিকে, ফ্লোরাটাস, অক্টোপাস, নামের পোষাক। তবে বেচা কেনার শীর্ষে কিরনমালা ও ফ্লোরাটাস রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ভেড়ামারা রেল বাজারের ষ্টুডেন্ট ক্লথ ষ্টোর এন্ড ঢাকা টেইলার্সে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিভিন্ন রঙ্গের ও বাহিরী ডিজাইনের পাঞ্জাবী ও ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের বিভিন্ন নাটকের নামে বাহারি রঙের পোষাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দোকানের মালিক মোছাদ্দেকুর রহমান ও মুদাব্বির রহমান জানান, গত বছর পাখি পোষাক নিয়ে মার্কেট গুলোতে হৈ চৈ উঠেছিল। যে কারণে ওই পোষাকের চাহিদা বেশি রাখায়, বেঁচা বিক্রি হয়েছেও ভাল। এবারের ঈদ বাজারেও ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামকরণ করেছে বিভিন্ন ড্রেস। তবে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছে কিরণমালা ও জিসম-২।

কেনাকাটা করতে আসা মোছাঃ শাবনুর আল-মাহাদী জানান, ভেড়ামারা মধ্যবাজারের আল-মাহাদী সুপার মার্কেট থেকে সুলভ মূল্যে বাজার করতে পেরে আমি খুশি। মোছাঃ আমিনা খাতুন জানান, তার দুইটি মেয়ে, একটি ছেলের চাহিদা মতো পোষাক কিনতে পেরেছে। এছাড়া রেল বাজারের মুকুল ক্লথ ষ্টোর, আতিয়ার ক্লথ ষ্টোর ও মোশাররফ গার্মেন্স ঘুরে দেখা যায়, বাহারি রঙের শাড়ি কাপড় ও থান কাপড় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। গৃহিণীরাও ভিড় করছে ওই দোকান থেকে চাহিদামত পোষাক কেনার জন্য।

ভেড়ামারা মধ্যবাজারের এনামূল ক্লথ ষ্টোরের মালিক মীর এনামূল ইসলাম জানান, এ দোকানে ৫শত টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা মূল্যমানের বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি কাপড় রাখা হয়েছে ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে। রেলবাজারের হকার্স মার্কেট ঘুরে দেখা যায় নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতা সাধারণের উপছে পড়া ভিড় করেছে কসমেটিস্ ও জুতা সেন্ডেল এর দোকান গুলোতে। মনোয়ার সু ষ্টোরের মালিক মোঃ মনোয়ার বলেন, ছেলেমেয়েদের যে কোন ধরনের জুতা দেড়শত টাকা থেকে ৫ শত টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। মিষ্টি’র দোকান গুলোতে এখন নিত্য-নতুন নানা পদের ইফতারী’র আইটেম তৈরি করা হচ্ছে। ভেড়ামারা রেল বাজারের পাবনা সুইটস্ এর মালিক শ্রী সনজিত কুমার জানান, রোজা’র মাসে আমরা বিভিন্ন নানা পদের রকমারী ইফতারী আইটেম করে থাকি।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করা হলে, ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শান্তি মনি চাকমা ও ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ছগির মিঞা জানালেন, ঈদুল ফিতরের ভেড়ামারা থানা’র হাট বাজারগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এমনকি বড় বড় মার্কেট গুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল জোরদার রাখা হয়েছে।