দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ২০ জুলাই, ২০১৫ : বৃষ্টিভেজা সকাল আটকাতে পারেনি সহপাঠীদের সাথে দেখা করার সুর্বণ সুযোগকে। ঘড়ির কাটা যখন দশটা বেঁজে ওঠে ঠিক তখনই পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় আয়োজনস্থল। তখনও মুষলধারে বৃষ্টি ঝড়ছিলো, তাতে কি; দীর্ঘ ৩৩ বছর পর একত্রিত হওয়ার সুযোগ। তাই বৃষ্টিও আটকাতে পারেনি শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে। তারা এখন কেউ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কেউবা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, প্রভাষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। তার পরেও দীর্ঘদিন পর একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবীকে একসাথে কাছে পেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সুখের কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার ৯৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাহিলাড়া এ.এন. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। ওই বিদ্যালয়ের ১৯৮২ সালের এস.এস.সি ব্যাচের দিনভর আয়োজনের ঈদ পুর্ণমিলনী রবিবার বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণয় কান্তি অধিকারীর সভাপতিত্বে পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলার দু’বারের শ্রেষ্ঠ মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মো. ইসাহাক আলী সরদার, মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ফিরোজ ফোরকান আহমেদ, প্রাক্তন শিক্ষক বিমল চন্দ্র বাড়ৈ, প্রাক্তন ছাত্র এস.এম. মোর্শেদ, মোল¬া মো. মাহবুবুর রহমান, আনিসুর রহমান চুন্নু, জাকির হোসেন কবিরাজ, মাষ্টার মো. শাহাদাত হোসেন, অমল চন্দ্র রায়, ইউনুস মোল¬া, লক্ষন সমাদ্দার, শওকত হোসেন জুলহাস খলিফা, জগদিশ বিশ্বাস, প্রাক্তন ছাত্রী ফাহমিদা আক্তার, সেলিনা আক্তার, নুরজাহান বেগম, ইয়াছমিন মোল¬া, রেহানা বেগম, গীতা রানী, সবিতা রানী, বিথিকা মজুমদার প্রমুখ। স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তৎকালীন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাসহ প্রয়াত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ৮২ সালের ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে ভূরিভোজ শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। একই সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির প্রস্তাব অনুসারে ৮২ সালের ব্যাচের প্রতিষ্ঠিত ছাত্র-ছাত্রীরা তহবিল গঠনের ঘোষণা করেন। যাতে করে কোন শিক্ষার্থী অর্থাভাবে ঝড়ে না পরে সেজন্য এ তহবিলের অর্থ বিদ্যালয়ের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের কল্যানে ব্যয় করা হবে।