BNP

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ জুলাই: রাজনৈতিক দল হিসেবে আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে আওয়ামী লীগের মতো অতিরিক্ত দেড় মাস সময় চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে বিএনপিও।মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনের নেতৃত্বে ২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের কাছে এ আবেদন করেন।এ সময় তারা দলটির পক্ষে দেড় মাস অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেন।

আসাদুল করিম শাহীন বলেন, আমরা আইন অনুসারে ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছি। সচিব না থাকায় তার পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান আবেদন পত্রটি গ্রহণ করেন। সময় বৃদ্ধি করা হবে কি না এ বিষয়ে এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি।এ সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,১৮ কম বয়সীদের নিবন্ধন করা সংবিধান লঙ্ঘন। এ বিষয়ে আমাদের দল গতকাল আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কমিশনের পদত্যাগ চেয়ে ও হালনাগাদ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনও দাখিল করেছি।এখন উনি বিষয়টি দেখবেন।এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দলের মহাসচিব অনুপস্থিত থাকায় ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন চূড়ান্ত না হওয়ায় সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। এক্ষেত্রে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে।

এর আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও সময় বাড়াতে আবেদন করে। দলটি ৩০ দিন সময় চেয়েছে। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছে।আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোকে বিগত বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব ইসিতে দাখিল করতে হয়। পরপর তিন বছর কোনো দল হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে সে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।

সে অনুযায়ী, গত ১৭ জুন দেশের ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ২০১৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়া জন্য নির্দেশ দিয়েছিল ইসি।ওই নির্দেশনায় দলগুলোকে অডিট ফার্মের মাধ্যমে দু’টি ছকে মোট ২০ ধরনের তথ্য দিতে বলা হয়েছিল।এক নম্বর ছক অনুযায়ী, কর্মী বা সদস্যের চাঁদা, কার্যনির্বাহী কমিটি বা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা বা অন্যান্য চাঁদা, বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থার অনুদান, বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত অর্থ, নির্বাচনের সময় প্রার্থীদের অনুদান থেকে আয়ের হিসাব দেখাতে বলা হয়।

এছাড়া দলের পত্রিকা বা বই পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদ, বিভিন্ন মেয়াদী আমানত ও সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত সুদ, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে আয় এবং বিবিধ খাতেও আয় দেখাতে হবে।অন্যদিকে দ্বিতীয় ছক অনুযায়ী, কর্মীদের বেতন ভাতা, আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি ব্যয়, ডাক- টেলিফোন-ইন্টারনেট-কুরিয়ার সার্ভিস ও পত্রিকা বিল বাবদ ব্যয় দেখাতে বলা হয়এছাড়া আপ্যায়ন ব্যয়, পোস্টারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণার ব্যয়, যাতায়াত, প্রার্থীদের অনুদান, নির্বাচনী ব্যয় ও বিবিধ খাতেও ব্যয় দেখাতে হবে।

তবে এখন পর্যন্ত কেবল দু’টি দল বিগত বছরে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও জাতীয় পার্টি (জেপি) ২০১৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।গত বছরও আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বেশ ক’টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল। আর ২৫টি দল যথাসময়ে তাদের হিসাব দাখিল করে। এছাড়া পরপর দু’বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব ঠিকমত না দেওয়ায় এবারই শেষ সুযোগ পাচ্ছে গণফ্রন্ট।