Bogra Pic-11

দৈনিকবার্তা-বগুড়া, ১১ আগস্ট ২০১৫: বসবাসের অনুপযোগী ও পরিত্যক্ত ঘোষণার পর প্রায় ১৪ বছরেও বগুড়া সিভিল সার্জনের বাস ভবন নির্মিত হয়নি। ফলে জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি বাস ভবন না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে বিঘœ ঘটছে। বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ অর্ধেন্দু দেব বাস করছেন অফিসের একটি কক্ষে।বগুড়া গণপূর্ত বিভাগ ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৪ সালে তৎকালীন বৃটিশ শসনামলে বগুড়া সিভিল সার্জনের বাস ভবনটি নষ্ট হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে বগুড়া স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীতে ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে বগুড়া গণপূর্ত বিভাগের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে তৎকালীন বৃটিশ শাসনামলে নির্মিত সেমিপাকা, টিনের চালা,দরজা-জানালা নষ্ট সহ ভবনটি নষ্ট হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হবার কারণে সংস্কার অথবা পূনঃ নির্মাণ না করা পর্যন্ত ভবনটিতে বসবাস না করার অনুরোধ জানানো হয়। এর পর থেকে প্রায় ৮ জন সিভিল সার্জন বগুড়ার দায়িত্ব পালন করলেও কারো ভাগ্যেই সরকারি বাসভবন জোটেনি। বিগত ২০০১ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বগুড়া সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন ডাঃ এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন।

তিনি বছর খানেক সরকারি বাসভবনে বাস করার পর ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়। এর পর তিনি সরকারি বাসভবন ছেড়ে ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন । এরপর ডাঃ নুরুন নাহার , বগুড়া শহরের সুত্রাপুরস্থ তার নিজ বাসভবনে থেকেই সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডাঃ আব্দুল হক, ডাঃ শের মোস্তফা সাদিক খান(ভারপ্রাপ্ত), ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান, ডাঃ নির্মলেন্দু চৌধুরী(ভারপ্রাপ্ত), ডাঃ মোহাম্মদ শাহাদৎ হোসেন, ও ডাঃ মোঃ আফজাল হোসেন তরফদার বগুড়া সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন।

এবং সবাই সরকারি বাসভবন না পেয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করেছেন। একটি সূত্র জানায় এসব সিভিল সার্জন সরকারি বাসভবন না পেলেও কোন সিভিল সার্জনই বাসভবন নির্মাণে জোরালো ভূমিকা পালন করেননি। তারা প্রতিবছর একটি পত্র বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেছেন মাত্র। তবে ২০০২ সালের পর থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কোন সিভিল সার্জন বাস ভবন নির্মাণে কোন আবেদন সংশ্লিষ্ট উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেছেন এমন তথ্য বগুড়া সিভিল সার্জনের দপ্তরে নেই বলে সূত্রটি জানায়।

বগুড়া সিভিল সার্জনের বাস ভবন বসবাসের অনুপযোগী সম্পর্কে গণপূর্ত বিভাগ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে বগুড়া সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবন বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর ভবন নির্মাণে বরাদ্দ না পাওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণ কাজ তা বেশিদুর এগোয়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বগুড়া সিভিল সার্জনের বাস ভবন নির্মাণে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর এবং অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে ভবন নির্মাণের যাবতীয় কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাঃ অর্ধেন্দু দেব জানান, তিনি বগুড়ায় নতুন যোগদান করেছেন। অফিসের এটি কক্ষে অবস্থান করার কথা স্বীকার করে বলেন প্রতিবছর বগুড়া গণপূর্ত বিভাগকে ভবন নির্মাণে পত্র দিয়ে অবগত করা হয়েছে। তাছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতি বছর পত্র প্রেরণ করা হলেও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বাস ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীঘ্র বগুড়া সিভিল সার্জন বাস ভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।