দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দিতে সরকার বিধিমালা তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ও কাজের সুবিধার্থে সরকার এই পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও তিনি জানান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।অধিদপ্তরের কাজকে আরো গতিশীল করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ধীরে ধীরে এই অধিদপ্তরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে।অস্ত্র দিতে বিধিমালা তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ ও সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। অস্ত্র ছাড়াই তারা ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সরকার অস্ত্র দেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
মন্ত্রী বলেন, মরণনেশা ইয়াবা মহামারী আকার ধারণ করেছে যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ভ্রাম্যমান আদালতসহ বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করেও মাদককে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছি।এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালাও তৈরি করা হচ্ছে। বিধিমালার ওপর ভিত্তি করে তাদের অস্ত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশ ও সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। অস্ত্র ছাড়াই তারা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। এসব দিক বিবেচনা করা হচ্ছে।
অধিদফতরের কর্মকর্তাদের কাজের সুবিধার্থে সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা হবে। ধীরে ধীরে এ অধিদফতরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে বলেও জানান তিনি।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো অভিযানে যাওয়ার আগে তৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকার পুলিশকে জানিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে যাবেন। এতে আপনাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ইয়াবা একটি মরণনেশা। এটি দেশ ও সমাজের জন্য মহামারি আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ নানা অভিযান পরিচালনা করেও মাদককে নির্মূল করা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছি।
শুধু আইন নয়, মাদকের ছোবল থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বিষয়ে কাউন্সিলিং করতে হবে। তবেই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রতিটি মামলার রিপোর্ট যেন ভিত্তি নির্ভরভাবে তৈরি করা হয় সে ব্যাপারে যথেষ্ট নজরদারি রাখতে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.মো. মোজাম্মেল হক খান সম্মেলনে বলেন, আমাদের চেতনার শক্তিকে এই চেতনানাশক দ্রব্য ধ্বংস করছে। সমাজ থেকে মাদকদ্রব্য নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বছরে প্রাায় ১০ হাজার মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অধিদফতরের সকল কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সকল বড় বাধাকে উপেক্ষা করে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এ চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই আমাদের এগোতে হবে।
সম্মেলন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইউনিফর্ম প্রদান করেন এবং ব্যাচ পরিয়ে দেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মকর্তা সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হারুন-অর রশিদ, অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও গোয়েন্দা) ডিআইজি সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, পরিচালক (প্রশাসন) মো. আক্তার হোসেন সরকার, ঢাকা মহানগরের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা প্রমুখ। দেশের সব জেলার উপ-অঞ্চলের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।