image_91729_0

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ঈদুল আজহা উপলক্ষে কমলাপুর রেলস্টেশনে চতুর্থ দিনেও টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়।শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই আগাম টিকিট বিক্রি চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। শুক্রবার দেওয়া হচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বরের টিকিট। একজন টিকিট প্রত্যাশী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন।শুক্রবার সকালে দেখা যায়, কমলাপুর রেল স্টেশনের কাউন্টারগুলোর সামনে বিশাল লম্বা লাইন। লাইন বেঁকে প্লাটফর্মের বাইরে চলে গেছে। ২৪ তারিখ থেকে ছুটির শুরু বলেই আজ টিকিটের জন্য লাইনের সারিটাও হয়েছে বেশ বড়অনেকে সারারাত না ঘুমিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অবশেষে হাতে টিকিট পেয়ে সারারাতের কষ্ট ভুলে মুখে হাসি নিয়ে ফিরে গেছেন তিনি।

হাজার হাজার টিকিট প্রত্যাশীদের উপস্থিতিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্টেশনে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া, টিকিট কালোবাজারি শনাক্ত ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আগামী ২৪ সেপ্টম্বরের টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শেষ হবে।স্বজনদের সঙ্গে ঈদের অনন্দ ভাগাভাগি করতে ট্রেনের টিকিটের জন্য আজ শুক্রবার লাইনে দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার মানুষ। ২৩ সেপ্টেম্বরের কাক্ষিত দিনের ট্রেনের আগাম টিকিট কিনতে ছুটির দিনও কমলাপুর স্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে যাওয়া যাত্রীদের চিরচেনা সেই লম্বা লাইন। সবার লক্ষ্য কাক্ষিত সোনার হরিণ ট্রেনের টিকিটের দিকে।এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কালোবাজারির অভিযোগে নয়জনকে আটক করেছে র‌্যাব।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি টিকিট কাউন্টারে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন হাজার হাজার টিকিট প্রত্যাশী। লাইনে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা। এ সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্টেশনে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া টিকিট কালোবাজারি শনাক্ত ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।দিনাজপুরের সোহেলী বেগম রাত তিনটায় কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়েছেন, কিন্তু তার অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। বেলা ১১টা পর্যন্ত টিকিট না পেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছেন তিনি। সোহেলী বেগম বলেন, শুক্রবার সরকারি ছুটি, তারপর আবার কাঙ্ক্ষিত ২৩ সেপ্টেম্বরের টিকিট বিক্রির দিন হওয়ায় স্টেশনে অন্যদিনের থেকে বেশি ভিড় রয়েছে।প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেয়া হয় বিভিন্ন রুটের অগ্রিম টিকিট। একজন যাত্রীকে দেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেয়া হবে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।

এবার সিডিউল বিপর্যয় হবে না বলে আশা করছেন কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী।এদিকে যাত্রীদের চাপ সামলাতে আন্ত:নগর ট্রেনে যুক্ত হবে অতিরিক্ত বগি।তবে ট্রেনের টিকিট বিক্রির কাউন্টার না বাড়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ রয়েই গেছে।টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম প্রতিরোধে সতর্ক রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে প্রতিদিনই দু-একজন পাকড়াও হচ্ছে বলে জানান কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিদ মিয়া। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়ার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বেলা ২টার মধ্যে শেষ হয়ে গেলেও টিকিট প্রত্যাশীদের লম্বা লাইনের যেন শেষ নেই।শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে একাধিক স্টেশন কাউন্টারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। গভীর রাত ও সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিটের নাগাল না পাওয়ায় অনেকেই পরবর্তী দিনের অগ্রিম টিকিটের জন্য একই লাইনে সিরিয়াল ধরে রেখেছেন। বেলা আড়াইটার দিকে দীর্ঘ লাইনের হাজারো টিকিট প্রত্যাশীকে কাউন্টারের সামনে টিকিটের জন্য উদ্বিগ্ন দেখা যায়। ২৩ সেপ্টেম্বরের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে- কাউন্টারের এমন ঘোষণার পরেও প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় টিকিট প্রত্যাশীদের।একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রায় সবাই গত রাত ও শুক্রবার সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশিত টিকিট না পাওয়ায় তারা ২৪ সেপ্টেম্বরের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করবেন।এ ব্যাপারে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, এর আগে দুই দিন টিকিট দেওয়া হয়েছে। এই দুদিন বেলা দুটার আগেই টিকিট শেষ হয়ে যায়।যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় টিকিটের পরিমাণ কম হওয়ায় সবাই টিকিট পাননি বলে জানান তিনি। আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষ কমলাপুর রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছেন। তারা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষণ গুণছেন কখন সেই কাঙিক্ষত টিকিট নামের সোনার হরিণ’ হাতে পাবেন।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের এসব যাত্রী। টিকিট প্রত্যাশীদের কেউ কেউ আগের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লাইন দাঁড়িয়েছেন বলেও জানা যায়। তারপরও অনেকের মনে আশঙ্কা যদি টিকিট না পাওয়া যায়, তাহলে উপায় কী হবে?সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি টিকিট কাউন্টারে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকিট প্রত্যাশী হাজার-হাজার মানুষ। লাইনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের জন্য কোনো ধরনের ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা। অনেকেই খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে অপেক্ষায় আছেন টিকিটের জন্য।হাজার হাজার টিকিট প্রত্যাশীদের উপস্থিতিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্টেশনে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া, টিকিট কালোবাজারি শনাক্ত ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মো. জামিলুর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তিনি শুক্রবার সকাল ১০টা পযন্ত টিকিট পাননি। তার প্রত্যাশা সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট নিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজশাহীতে ঈদ করতে যাবেন।

টিকিট ছাড়ার ২২ ঘণ্টা আগে লাইনে দাঁড়িয়েও সংশয় প্রকাশ করে জামিলুর বলেন, ঠিকটাকভাবে টিকিট দেওয়া হলে টিকিট পাবো বলে আশা করি। তবে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে টিকিট ছাড়াই হয়তো ফিরতে হবে। তখন খুব বেশি কষ্ট লাগবে।জামিলুরের মতো আগের দিন বৃহস্পতিবার প্রায় একই সময় থেকে টিকিটের জন্য অপেক্ষায় আছেন ফারুক, মনির, আনোয়ারসহ অন্যর। তারা অভিযোগ করেন, প্রচণ্ড গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই গরমে ফ্যানের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল।কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিচ্ছেন। যতক্ষণ কাউন্টারে টিকিট থাকবে ততক্ষণ টিকিট দেওয়া হবে। গরমে টিকিট প্রত্যাশীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের কাউন্টারের জায়গাটা ছোট, যে কারণে ফ্যানের ব্যবস্থা করা যায়নি। ভবিষ্যতে যাত্রীদের এই দুর্ভোগ লাঘবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আগামী ২৪ সেপ্টম্বরের টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শেষ হবে।