2015_06_27_07_04_26_Q2k5goylc6yk3mPVhtG7ZJi0HDArbA_original

দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ১২ অক্টোবর ২০১৫: মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুরে এখন ইলিশের গুড়ি গুড়ি পোনা বিক্রির হাট বসছে। প্রতিদিন কোটি পোনা খোলামেলা বিক্রি হয়। মা ইলিশ ডিম ছাড়ার পরে রেণু থেকে একটু বড় হতেই ইলিশের বংশ ধ্বংসের এমন ভয়াল তান্ডব চলছে কলাপাড়ার গোটা উপকূলজুড়ে।এসব ইলিশ পোনার বয়স মাত্র ১০-১৫ দিন। নির্মম এ নিধনযজ্ঞে প্রজননকালীন সময় ইলিশ রক্ষায় সরকারের সকল উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি উপকূলের ইলিশের অভয়াশ্রমখ্যাত সাগরসহ আন্ধারমানিক মোহনা এলাকার ইলিশ সম্পদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইলিশের ক্ষুদ্র সাইজের পোনা অসংখ্য ঝুড়ি বোঝাই করে মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুরে নামে মাত্র দামে খোলা ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে। কেজি সর্বোচ্চ ২০-৩০ টাকা দরে ইলিশের এ পোনা বিক্রি হয়। প্রত্যেকটি পোনার সাইজ এক-দেড় থেকে সর্বোচ্চ দুই ইঞ্চি। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এক কেজি ইলিশের পোনায় অন্তত এক-দেড় হাজার পোনা পাওয়া যায়। আন্ধারমানিকসহ বিভিন্ন নদী এবং সাগরের অগভীর এলাকায় সুক্ষ্ম ফাঁসের বেড় ও মশারি নেটের বেহুন্দি জাল দিয়ে ধরা হয় ইলিশের পোনা। এমনকি শহর ছাড়া গ্রামের হাট-বাজারে ইলিশের পোনা ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। শুধুমাত্র মনিটরিংএর অভাব এবং স্বার্থান্বেষী মহলসহ সাধারণ জেলেদের অসচেতনতার কারণে কলাপাড়ার গোটা উপকূলজুড়ে ইলিশের গুড়ি গুড়ি পোনা নিধনের ভয়াবহ তান্ডব চলছে।

আলীপুর কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, সুক্ষ্ম ফাঁসের নেট দিয়ে এভাবে ইলিশের গুড়ি গুড়ি পোনা ধরা বন্ধ না করলে মা ইলিশ রক্ষায় সকলের উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। তিনি এও বলেন, ‘এসব ইলিশ পোনার বয়স মাত্র ১০/১২ থেকে ১৫দিন। এরপরে আবার ইলিশের পোনা ধরা ও বিক্রি হবে চাপিলার নাম দিয়ে।’ আনসার মোল্লার দাবি অমাবস্যা পর্যন্ত ইলিশ ডিম ছাড়বে। মাত্র কয়েকদিন আগে ডিম থেকে ফোটানো ইলিশের পোনা এখন সাগর উপকুলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। বিশেষ করে সাগরের অগভীর এলাকায় এবং আন্ধারমানিক মোহনা এলাকায় এখন সকল ধরনের সুক্ষ্ম ফাঁসের জালের ব্যবহার বন্ধ রাখা প্রয়োজন। আর বিক্রি বন্ধে হাটে-বাজারে অভিযান চালানো প্রয়োজন।

সচেতন জেলেরা জানান, প্রজননকালীন সময় নিয়ে এমনিতেই হের-ফের রয়েছে। তাদের দাবি এখনও মা ইলিশ ডিম ছাড়ছে। তারপরে এখন মারা পড়ছে কয়েকদিন বয়সী ইলিশ পোনা। খেপুপাড়া মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল হক জানান, এই মুহুর্তে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষিত এলাকায় বেহুন্দিসহ সুক্ষ্ম ফাঁসের জালের ব্যবহার সম্পুর্ণভাবে বন্ধ রাখতে হবে। নইলে ইলিশ সম্পদের ভয়াবহ ক্ষতি হবে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, ইলিশ সম্পদ রক্ষায় সাগর মোহনাসহ সকল নদ-নদীতে সুক্ষ্ম ফাঁসের জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে সাড়াশি অভিযান চালানো হবে।