Bandar1

দৈনিকবার্তা-হিলি, ১২ অক্টোবর ২০১৫: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফল আমদানিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক আমদানিকৃত পন্যবাহী ট্রাকের চাকা অনুযায়ি পন্যের শুল্কায়ন আহরনের পদ্ধতি চালু করার ফলে বন্দর দিয়ে দেড় বছর ধরে সব ধরনের ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে করে বন্দরের কাঙ্খিত রাজস্ব আহরন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। কাষ্টমস কর্তৃপক্ষও তাদের নিধারিত রাজস্ব আয়ের টাগেট পুরনে বার বার ব্যার্থ হচ্ছে।ফল ব্যাবসায়ীররা বলেন, আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে তারা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের ফল আমদানি বন্ধ রেখেছে।

অপরদিকে কাষ্টমস কতৃপক্ষ বলছেন আমদানি কারকরা ফল আমদানি করলে সঠিকভাবে পন্যের ওজন করে তারা যে পরিমান পন্য আমদানি করবেন সে পরিমান পন্যেরই রাজস্ব নেওয়া হবে। বাংলাহিলি কাষ্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, হিলি স্থলবন্দরের সাথে ভারতের হিলি বন্দরের যোগাযোগ ব্যাবস্থা অত্যান্ত ভালো হওয়ায় আমদানিকৃত পন্য অতিসহজেই ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও হিলি স্থলবন্দরের সাথে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভালো। যোগাযোগ ব্যবস্তার কারনে আমদানিকৃত ফল অতিসহজেই বাজার ধরতে পারায় ব্যবসায়ীরা দামও ভালো পায়। এসব কারনে আমদানিকারকদের কাছে তারাতারি জনপ্রিয় হয়ে উঠে হিলি স্থলবন্দর।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন কমলা, আপেল, কেনু, আঙ্গুর, আনারসহ বিভিন্ন ধরনের তাজা ফল ৩৫ থেকে ৭০ ট্রাক আমদানি হতো। কিন্তু বিগত বছরের মে মাসে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে শুল্ক ফাকির মাধ্যমে ফল আমদানি করার বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হিলিস্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানির ক্ষেত্রে গাড়ির চাকা অনুযায়ি ৬ চাকার গাড়িতে ১৪ টন, ১০ চাকার গাড়িতে ১৮ টন এবং ১২ চাকার গাড়িতে ২০ টন পন্যের শুল্কায়ন করার আদেশ দেন। এর ফলে গত বছরের মে মাস থেকে হিলিস্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের তাজা ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে।এদিকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় উত্তরাঞ্চলের বাজারে প্রভাব পড়েছে। পূর্বে প্রতি কেজি আপেল ৮০ থেকে ১শ টাকা বিক্রি হলেও আমদানি বন্ধ থাকায় বর্তমানে প্রতি কেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১শ৩০ টাকা থেকে ১শ৫০ টাকা দরে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন বলেন, স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানির ক্ষেত্রে যে গাড়ির চাকা অনুযায়ি শুল্কায়নের পদ্ধতি চালু রয়েছে এর ফলে একজন আমদানি কারক একটি ৬ চাকার গাড়িতে ৫টন ফল আমদানি করলেও সে গাড়ির চাকা অনুযায়ি ১৪টন হিসেবে শুল্কায়ন করে রাজস্ব আদায় করা হবে এতে করে আমদানিকারকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। যার ফলে আমদানি কারকরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ রেখেছেন।

অন্যান্য বন্দরে রাজস্ব ফাঁকির মতো ঘটনা ঘটলেও হিলি স্থলবন্দরে এরুপ কোন ঘটনা আজ পর্যন্ত ঘটেনি। তাই হিলিস্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানির ক্ষেত্রে গাড়ির চাকা অনুযায়ি শুল্কায়নের পদ্ধতি শিথিল করা প্রয়োজন।হিলিস্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যাবসায়ীরা জানান, ফলের গাড়ির চাকা অনুযায়ি শুল্কায়নের পদ্ধতি চালু করার ফলে বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সকল ধরনের তাজা ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ভোমরা, বুড়িমারিসহ দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোতে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভালো পাওয়ার ফলে আমদানিকারকরা বর্তমানে ওই সব বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করছে।হিলি স্থল শুল্কষ্টেশনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো.মতিয়ার রহমান বলেন, আমি সবেমাত্র হিলিস্থলশুল্কষ্টেশনে যোগদান করেছি। এখানে আসার পরে এখন পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ফল আমদানি হতে দেখেনি। আমদানিকারকরা ইচ্ছে করলে বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করতে পারেন এটা তাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে।