image_68612_0

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ অক্টোবর ২০১৫: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) আ স ম হান্নান শাহ দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধান চূড়ান্ত করার আগে এ বিষয়ে গণভোটের দাবি জানিয়েছেন ৷তিনি বলেন, আমাদের (বিএনপির) মতামত তো নিবেনই না, যাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন, অন্তত এ বিষয়ে তাদের মতামত নিন৷মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. পিয়াস করিমের প্রথম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷হান্নান শাহ বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি আছে বলে যে প্রচারণা করা হচ্ছে, তা সত্য না মিথ্যা, তা জানি না৷ যদি থাকতো, তবে তা মোকাবিলা করতে সেনাবাহিনী নামাতে হতো৷ ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার এফবিআই আনল৷ কিন্তু দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের কেন আমন্ত্রণ জানানো হলো না৷
তিনি বলেন,এই সরকার কথা কথায় জামায়াত-বিএনপিকে দায়ী করছে৷ এমনকি বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও বিএনপিকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে৷ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জাতি হতাশ৷ এতে তদন্ত বিঘ্ন হবে৷ হান্নান শাহ বলেন, দেশের কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা৷ মূলত সরকার তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতেই এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

আওয়ামী লীগের হাতে বর্তমান একট কার্ড রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি কার্ড নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে৷ আর এই কার্ডটি হচ্ছে জঙ্গিবাদের কার্ড৷ তবে দেশে কোন জঙ্গিবাদ নেই৷ কিন্তু আওয়ামী লীগের ভাষায় টেন্ডারবাজি, লুটপাট ও মারামারি করাটাই জঙ্গিবাদ৷ তাই আমি যদি আওয়ামী লীগের ভাষায় বলি, তাহলে আওয়ামী লীগই একটি জঙ্গিবাহিনী৷প্রথমে ফাঁসি এরপর বিচার, এই নীতিতে আওয়ামী লীগ চলে বলেও মন্তব্য করেন হান্নান শাহ৷দুই বিদেশি হত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনাকে অনুরোধ করছি এসব বিষয়ে কিছু বলবেন না৷ কারণ আপনারা এই বিষয়ে মতামত দিলে তদন্ত অফিসাররা আপনাদের মতামতের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারবে না৷সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, দুই বিদেশিকে হত্যা করা হবে৷ এই তথ্য আপনার কাছে আগেই ছিল৷ তাহলে এই হত্যা সংঘটিত হলো কীভাবে?’আত্মসমালোচনা করে হান্নান শাহ বলেন, দেশের সকল ঘটনায় আমরা শুধু নিন্দাই করে যাচ্ছি৷ কিন্তু এই নিন্দাকে প্রতিবাদে রূপান্তরিত করতে সচেষ্ট হইনি আমরা৷শিগগিরই দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিএনপির পরামর্শক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ৷

এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো গণতন্ত্র ও আইনরে শাসন নেই৷ফলে ক্ষমতাসীনরা তাদের নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছে৷ এর ফলে ক্ষতির শিকার হবেন দেশের রাজনৈতিক নেতারা৷দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রিসভার সায় দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি৷ এর ফলে সারাদেশে গ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে৷দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে নির্বাচন কমিশনকে অপরাধী আখ্যায়িত করেন এমাজ উদ্দিন৷ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, নতুনভাবে সংগঠিত ও নতুনভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়ার৷

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মো.রহমাতুল্লাহের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রফেসর ড. মাহবুল্লাহ প্রমুখ৷