2311

দৈনিকবার্তা-মংলা, ১৪ অক্টোবর ২০১৫: মংলার দিগরাজে হাইওয়ে সড়কের পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বসত্মিতে চলছে নানা ধরণের বেআইনি ও অসামাজিক কর্মকান্ড৷ বসত্মির এক শ্রেণীর মহিলা দোকানদার কৌশলে চালাচ্ছে দেহ ব্যবসা, মাদক কেনা-বেচা৷ সেই সাথে চলছে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশয়৷ এতে করে এলাকার সামাজিক পরিবেশ কলুষিত হচ্ছে৷ এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেৰিতে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, মংলা-খুলনা মহাসড়কের দিগরাজ বাজার এলাকায় সড়ক ও জনপথের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট৷ বিশেষ করে দিগরাজ পেট্টোল পাম্পের উল্টো পাসের রাসত্মার পাশ দিয়ে গড়ে ওঠা চায়ের দোকানগুলো পরিচালনা করে থাকে মহিলারা৷ আর এ সকল দোকানের পিছনেই তারা বসবাস করে থাকে৷ সন্ধ্যার পর থেকে দোকানগুলোতে শুরম্ন হয় নানা ধরণের অপকর্ম৷ দোকানের পিছনের ঘরে বিভিন্ন ধরণের মাদক সেবনের পাশাপাশি চলে অসামাজিক কর্মকান্ড৷ রাত বাড়ার সাথে সাথে রাসত্মার পাশের চাসহ অন্যান্য দোকানের সামনে দেখা যায় সারিবদ্ধভাবে থাকা ট্রাক ও গাড়ির লাইন৷ এ সকল ট্রাক ও গাড়ির চালক ও হেলপাররা বিভিন্ন দোকানের পিছনে ও দোকানীদের বাড়িতে রাত্রি যাপনসহ উঠতি বয়সের মেয়েদের নিয়ে ফূর্তি করে থাকে৷ রাসত্মার পাশের এই দোকানগুলোর মহিলারাই কৌশলে সেখানে সন্ত্রাসীসহ নানা ধরনের অপরাধী লোকজনকে আশ্রয় প্রশয় দিয়ে থাকে৷ এলাকাবাসী জানায়, চা কিংবা অন্য কোন দোকানের আড়ালে ওই এলাকায় সবচেয়ে যিনি অসামাজিক কাজে লিপ্ত তিনি হলেন রাজিয়া৷ রাজিয়া বেগম বানীশানত্মা পতিতা পলস্নীর সদর্ারনি ছিলেন৷ বানীশানত্মা বসে রাজিয়া দেহ ব্যবসা করতেন আর অন্য মেয়েদের দিয়েও করাতেন৷ বানীশানত্মা থেকে ফিরে বেশ কয়েক বছর আগে রাজিয়া ঘর তোলেন দিগরাজ মহাসড়কের রাসত্মার পাশের সড়ক ও জনপথের জায়গায়৷ সেখানে বসে তিনি তার লোকজন নিয়ে শুরম্ন করে সেই পতিতাবৃত্তি৷ তার দেখা দেখি ওই বসত্মির প্রায় ঘরেই এখন চলছে দেহ ব্যবসা৷ মমতাজের চায়ের দোকানের মমতাজ ও ফাতেমা, ফরিদার দোকানের ফরিদা ভাড়াটিয়া মেয়ে দিয়ে করাচ্ছেন দেহ ব্যবসা৷ এ ছাড়া ছবি, শিউলি, রম্নমা, সুমির চায়ের দোকানে ও দোকানে পিছনে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ৷ সন্ধ্যার পর রাত বাড়ার সাথে সাথেই এ সব দোকানগুলোর চারপাশ দিয়ে কাপড়সহ বিভিন্ন আসবাব দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়৷ এরপর আসতে থাকে নানা ধরণের খদ্দের৷ কেউ আসে মাদক বিকিকিনি করতে কেউ আসে সেখানকার দোকানী ও দোকানীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মহিলাদের সাথে রাত কাটাতে৷ দিগরাজ বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ছোট ছোট এই চায়ের দোকানগুলো রাত ২/৩টা পর্যনত্ম খোলা থাকে৷ এ সব ঘরগুলোতে বেশির ভাগ এসে থাকে ট্রাক ড্রাইভাররা৷ রাতে রাসত্মার পাশের এই সকল চায়ের দোকানের সামনে ট্রাকের জটলা পড়ে৷ ট্রাকে গিয়ে দেখা যায় তাতে কোন লোক নেই৷ এছাড়া এলাকার উঠতি বয়সের যুবকেরা ঝুকে পড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপের দিকে৷ দোকানের বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের সাথে গল্প করতে করতে এখানে আসা খদ্দেররা কৌশলে চলে যান যে যার পছন্দের মেয়ের সাথে তার ঘরে৷ এই চায়ের দোকানগুলোতে দিন রাতে সব সময়ই যেন ভিড় লেগেই থাকে৷

স্থানীয় বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনিবার্ন হালদার বলেন, বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে বসত্মির অসামাজিক কার্যকলাপরে বিষয়টি তিনি শুনেছেন৷ তিনি আরো বলেন, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ট্রাক চালক ও হেলফাররা এই বসত্মিতে অসামাজিকভাবে দিনের পর দিন রাত্রিযাপন করে আসছে৷ এ বিষয়ে এলাকাবাসী বিগত সময় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছে৷ তবে স্থানীয় প্রশাসন ও নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তিনি৷ এছাড়া সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন এখানে আত্মগোপনে থাকতে পারে বলেও তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন৷ এ ব্যাপারে মংলা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ লুত্‍ফুর রহমান বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই, খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷