3046_100062

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ অক্টোবর ২০১৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ও একটা পরিস্থিতি তৈরির লক্ষ্যেই সম্প্রতি দু’জন বিদেশীকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে৷প্রধানমন্ত্রী বুধবার তাঁর কার্যালয়ে নেদারল্যান্ডের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, পরিস্থিতির ওপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং সরকার সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিমর্ূল করতে প্রস্তুত৷ বাংলাদেশে সদ্য দায়িত্ব গ্রহণকারী নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিজ লিওনি কিউলেনের এখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্‍ করেন৷বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের অবিরত অভিযানের কথা উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ প্রতিবেশী দেশগুলোর জঙ্গি কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়েছে৷প্রধানমন্ত্রী দেশে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কিছু সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের উল্লেখ করে বলেছেন, তারা জাতির পিতার ঘাতকদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল৷ তিনি বলেন, তারা ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল এবং চলতি বছরের শুরুতে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নামে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা অশুভ শক্তির যেকোন ধরনের ষড়যন্ত্র নস্যাত্‍ করতে প্রস্তুত রয়েছি৷

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে নতুন এই দূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব, পানি ব্যবস্থাপনা, শিপিং, কৃষি এবং সমুদ্র ভূমি উদ্ধারের মতো অনেক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে৷শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার জনগণের জীবনমান উন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ৷ এ ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডের মতো উন্নত দেশগুলো আমাদেরকে সহায়তা করতে পারে৷
ডাচ দূত সম্প্রতি জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ দুটি পুরস্কার লাভ করায় এবং তাঁর নেতৃত্বে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান৷ তিনি এই সুন্দর দেশে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখতে চান৷ কৃষি, শিপিং ও সমুদ্র ভূমি উদ্ধার বিষয় দুই দেশের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজ এবং পরস্পরের উপর নির্ভরশীল৷ এজন্য পারস্পরিক স্বার্থে সহযোগিতা প্রয়োজন৷

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রম্নটের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হেগ নগরীতে মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য তিনি আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন৷উন্নয়নের জন্য অনত্মভর্ুক্তিমূলক অর্থায়ন সংক্রানত্ম জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল অ্যাডভোকেট হিসেবে আগামী মাসে নেদারল্যান্ডের রাণী ম্যাঙ্মিার প্রসত্মাবিত সফরকে শেখ হাসিনা স্বাগত জানিয়েছেন৷ ডাচ রাষ্ট্রদূত আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রগতির প্রশংসা করেন৷ প্রধানমন্ত্রী নদী খনন, ভূমি উদ্ধার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ, উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেস্টনী গড়ে তোলা সহ জলবায়ু অভিযোজন পদক্ষেপে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ -এর অধীনে চলমান যৌথ কার্যক্রমে সনত্মোষ প্রকাশ করেন৷প্রধানমন্ত্রী ডাচ রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর সরকারের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন৷প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন৷