amaz-uddin-ahmed-md20150327215002

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ২০১৫: দেশে ক্রান্তিকাল চলছে’ তা আর বলতে চাই না। কেননা, ক্রান্তিকাল চলছে বলতে বলতে ক্রান্তি আমাদের পেয়ে বসেছে। খুব শিগগিরই দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিএনপির পরামর্শক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এ আলোচনাসভা আয়োজন করে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা পরিষদ, যার আহ্বায়ক এমাজউদ্দীন আহমদ।

এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো গণতন্ত্র ও আইনরে শাসন নেই। ফলে ক্ষমতাসীনরা তাদের নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছে। এর ফলে ক্ষতির শিকার হবেন দেশের রাজনৈতিক নেতারা।দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রিসভার সায় দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এর ফলে সারাদেশে গ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে নির্বাচন কমিশনকে অপরাধী আখ্যায়িত করেন এমাজ উদ্দিন।তিনি বলেন, ক্রান্তিকাল চলছে বলতে বলতে ক্রান্তি আমাদের পেয়ে বসেছে। তাই ক্রান্তিকাল চলছে আর বলতে চাই না। দেশে এখন সংকটকাল চলছে। এই সংকট ইতিহাস বিকৃতির সংকট। তবে তরুণ প্রজন্মের কর্মকাণ্ড যদি দেশের প্রান্তিক পর‌্যায়ে ছড়িয়ে যায়, তবে সংকট কেটে যাবে।

তিনি বলেন, যেভাবে দেশের ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে, তা রোধ না হলে আগামীকে শেখাবো কী? তাই প্রকৃত ইতিহাস তুলে আনতে হবে। এভাবে আমরা অগ্রসর হতে চাই।এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ইতিহাস সেকেন্ডারি সোর্স বা ওয়াল সোর্স থেকে লেখা হয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের সময়কার যারা বেঁচে আছেন, তাদের সঙ্গে যোগযোগ রক্ষা করা দরকার। এজন্যই এমন এক সংগঠন করতে চাই যারা প্রকৃত তথ্য বের করে আনবে।এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার‌্য অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, কবি আব্দুল হাই শিকদার, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু সাঈদ, আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব অমর চন্দ্র মিস্ত্রী প্রমুখ।

এদিকে, মডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি করেন তিনি।অধ্যাপক ডা. এম এ হাদীর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মেডিকেল শিক্ষা ও অধ্যাপক এম এ হাদী’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, মেডিকেলে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে শাহবাগে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদের মারধর করলে হবে না। বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত হলেই এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলন করলেই আমরা মারধর করতে পারি না। মানুষকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলতে পারি না। শাহবাগে আন্দোলন করলেও মারধর করতে পারি না। অথচ আমরা কী দেখছি? এমপি গুলি করার পর আমাদের হাইকোর্ট দেখানো হয়।আন্দোলন প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখন আন্দোলন সংগঠিত উপায়ে হয় না। কে সংসদে আছে সেটা কথা নয়, আমরা একত্রে আন্দোলন করেছি। কী করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। দুঃখটা হচ্ছে, এখন তা হয় না।তিনি বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। অথচ সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছেন যারা, তাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের স্মরণ করতে হবে। অন্যথায় দেশের উন্নতি হবে না।আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবীর লাবুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. মো. তাহির, ড্যাবের মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ডা. এসএম রবিউল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।