103531_1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৫: নগর পরিবহনে বেশি ভাড়া আদায়কারী পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় যাত্রীদের সাময়িক ভোগান্তি হলেও এ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিস) কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির ডিপো ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।মন্ত্রী বলেন, জনভোগান্তি সাময়িকভাবে যতই হোক, গণপরিবহনগুলো যেন সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিতে বাধ্য হয়, সেজন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন,অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবার ব্যবস্থা নিতে গেলেই সমস্যা। ব্যবস্থা নিলেই জনদুর্ভোগ হবে; এজন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না- এটা ঠিক না।সাময়িক ভোগান্তি হলেও ব্যবস্থা নিতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়ার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে রোববার সকালে মিরপুরের তালতলায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত এক চালককে এক মাসের কারাদণ্ড দেয় এবং কয়েকটি বাসের চালককে জরিমানা করে।

এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ শুরু করে পরিবহন শ্রমিকরা। গণপরিবহন সংকটের কারণে প্রায় সাত ঘণ্টা ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।পরে রোববার বিকাল ৫টার দিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও বিআরটিএর চেয়ারম্যানের আশ্বাসে চালক ও শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশ নানা অজুহাতে নিয়মিত তাদের হয়রানি করে। এছাড়া প্রতিদিনই নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে না পারলে মালিক মজুরি কেটে রাখে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, রাজধানীর গণপরিবহনগুলোর ৬০ শতাংশ সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে, আর ৪০ শতাংশ আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া।এসময় বিআরটিসি বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেও নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের।মন্ত্রী একইসঙ্গে বিআরটিসি বাসগুলো যেন অপরিষ্কার ও নোংরা না থাকে এবং এ নিয়ে আর যেন কোনো যাত্রী অভিযোগ না আসে সেজন্য বিআরটিসির চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দেন।

ফিটনেস ছাড়া কেন রাস্তায় বাস নামানো হচ্ছে সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বিআরটিসির চেয়ারম্যানের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, লিজের নামে ডিপো ম্যানেজাররা অপকর্ম করেন। গাড়িগুলো লিজ দিয়ে তার কোনো খবর রাখা হয় না।বিআরটিসির মহিলা বাস সার্ভিস নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, নারীরা তাদের আসনগুলোকে কি ঠিক মতো পান? তারা সিট না পেয়ে অপমানিত হয়ে আমাকে ফোন করেন।সড়কে নতুন গণপরিবহন নামানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাস বাড়ানোর জন্য কতোগুলো প্রস্তাব পড়ে আছে। সেনাবাহিনী কিছু বাস নামানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

আগামী ২৯ অক্টোবর এ নিয়ে একটি বৈঠক আছে। ১০০ মিনিবাস নামানোর একটা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, রাষ্ট্রীয় পরিবহন প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি এখন লাভজনক অবস্থানে রয়েছে। ঢাকার ১৪টি রুটে ১৬টি মহিলা বাস আছে এবং সেগুলো সকাল-বিকেল সার্ভিস দিচ্ছে বলেও জানান বিআরটিসি চেয়ারম্যান।বৈঠকে বিআরটিসির টেকনিক্যাল পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পারভেজ আহমদ বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিতে জনবল সংকট রয়েছে। ৩৪ ভাগ লোক দিয়ে শতভাগ কাজের চেষ্টা করা হচ্ছে।এছাড়া, বিআরটিসির কোনো বাস অতিরিক্ত ভাড়া নেবে না বলে মন্ত্রীর কাছে অঙ্গীকার করেন প্রতিষ্ঠানটির ডিপো ম্যানেজাররা।