ttt_143666

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৫: সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকা) আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, তার (সাকার) বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ বানোয়াট এবং মিথ্যা। এসব অভিযোগ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ উপদেষ্টা বলেন, সাকা চৌধুরী রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধী ছিলেন না।এ বিষয়ে দেশী ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। আদালত অনুমতি দিলে তার পক্ষে ডিফেন্সের সাতজন সাক্ষী জোড়ালো সাক্ষি দিবেন।

সাকার জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পড়াশুনা করার উদ্দেশ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ঢাকা ত্যাগ করেন। ওই সময় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সহপাঠী ছিলেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কূটনীতিক মোহাম্মদ ওসমান সিদ্দিক, পাকিস্তানে বসবাসরত বিশিষ্ট স্থপতি মুনিব আরজুমান্দ খান, পাকিস্তানে বসবাসরত বিশিষ্ট সমাজকর্মী আম্বার হারুণ সায়গল, পাকিস্তানে বসবাসরত বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী ইসহাক খান খাকোয়ান, পাকিস্তানে বসবাসরত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রিয়াজ আহম্মদ নুন যিনি ভিকারুন্নেসা নূন এর নাতি ও পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মিয়া সুমরো এবং বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শামীম হাসনাইন।

এদিকে,সাকা চৌধুরীর পক্ষে রিভিউ শুনানিতে ৫পাকিস্তানি নাগরিকসহ ৭ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন জানানো হয়। সাকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম খান আল ফেসানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে এ ধরণের আবেদন নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, রিভিউ আবেদনের সময় শেষ, যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী অন্তর্ভূক্তির কোন সুযোগ নেই। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ২৩টি অভিযোগের মধ্যে চারটিতে (অভিযোগ নং- ৩, ৫, ৬ ও ৮) তাকে ওই শাস্তি দেয়া হয়। এছাড়া তিনটি (অভিযোগ নং- ২, ৪ ও ৭) অভিযোগে তাকে ২০ বছরের ও দুটি (অভিযোগ নং- ১৭ ও ১৮) অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সাকা চৌধুরী। আপিলেও মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের সঙ্গে তার মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। এরপর দুজনের রায়েরই পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি একসঙ্গে আসে ট্রাইব্যুনালে। ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করলে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেয়া হয়।এরপর নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিন শেষ হওয়ার আগের দিন গত বৃহস্পতিবার ফাঁসির রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ দায়ের করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।একই দিন রিভিউ করেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। রিভিউ খারিজ হলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করতে হবে তাদেরকে।