Amu20151025111607

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ অক্টোবর ২০১৫:  দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত বিসিক শিল্পনগরিতে রপ্তানিমুখী শিল্প স্থাপনের উপযোগী অবকাঠামো ও সেবা সহায়তা জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বর্তমান সরকার জাপান, চীন, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। তিনি এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত রপ্তানীমুখী শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিসিকের মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দেন। রোববার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) দু’দিন ব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন-২০১৫ এর উদ্বোধনকালে শিল্পমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।

রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (স্কিটি) মিলনায়তনে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। বিসিক চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পসচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এতে অন্যদের মধ্যে বিসিকের পরিচালক (উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) নুরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিসিকের ভূমিকার ফলে জিডিপিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে বিসিকের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ড ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতার আলোকে সৃজনশীল প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

বিসিকের যে কোনো সৃজনশীল প্রকল্পের প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সমর্থন থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।সম্মেলনে জানানো হয়, বিসিকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় সারা দেশে ১ লাখ ১৭ হাজার ক্ষুদ্র শিল্প এবং ৮ লাখ ৩৭ হাজার কুটির শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেছে। এসব শিল্প কারখানায় প্রত্যক্ষভাবে ৩৬ লাখ ৬২ হাজার লোকের কর্মসং¯’ান হয়েছে। ২০১৫ অর্থ বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অব¯ি’ত বিসিক শিল্পনগরীর কারখানাগুলোতে ৪৩ হাজার ৮শ’ ৫৮ কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী উৎপাদিত হয়েছে, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা বেশি। উৎপাদিত এসব পণ্য সামগ্রীর মধ্যে ২৪ হাজার ৫শ’ ৯১ কোটি টাকার পণ্যই ছিল রপ্তানিযোগ্য। একই সময়ে শিল্পনগরির বিভিন্ন কারখানা থেকে সরকার সাড়ে ২৬শ’ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় ২০১৫ এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে জিডিপিতে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান শতকরা ২০ দশমিক ১৭ ভাগ। খাতওয়ারি বিবেচনায় এ সময় ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতে মোট প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতকরা ১০.৩২ ভাগ। এর মধ্যে ক্ষুদ্রায়তন শিল্পখাতে শতকরা ১০ দশমিক ৭০ ভাগ এবং বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে শতকরা ১০ দশমিক ২৪ ভাগ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধির ফলে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বেড়ে চলেছে। প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।