দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: কলামনিস্ট ও পরিবেশবাদী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, এ সরকার ১০ বছরে শতশত মানুষকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে, এখন সুন্দরবনকেও ক্রসফায়ারে দিতে চায়।একইসঙ্গে তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, মানুষের ক্রসফায়ার ঠেকাতে পারি নাই। কিন্তু সুন্দরবনকে ক্রসফায়ারে দিতে চাইলে যেকোনো মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় কনভেনশনে তিনি এ কথা বলেন। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটি এ কনভেনশনের আয়োজন করে।
সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিন্ধান্তকে রাষ্ট্রঘাতি হিসেবে উল্লেখ করে আবুল মকসুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে আমরা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছি। কিন্তু সরকার আমাদের কথায় কান দিচ্ছে না। আমরা সরকারের কোনো উন্নয়নের বিরোধিতা করি না। বরং যে প্রকল্প গোটা জাতির সর্বনাশ ডেকে আনে আমরা তার বিরোধিতা করে থাকি। সুন্দরবন ধ্বংস না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। কনভেনশনে জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমরা উন্নয়ন বিরোধী নই। আমরা চাই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুন্দরবন নয়, অন্য স্থানে নির্মিত হোক। তিনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে তাদের সাথে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানান।
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে চারমাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।কর্মসূচি ঘোষণা করেন- জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আছে- ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৬ পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে জেলা সফর ও সমাবেশ। ১৬ জানুয়ারি থেকে ফেব্র“য়ারিজুড়ে ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় শহরে পদযাত্রা এবং আগামী ১০ মার্চ হতে ১৫ মার্চ ঢাকা থেকে রামপাল পর্যন্ত রোড মার্চ।এসময় সংগঠনের সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, বর্তমান সরকার ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনপন্থী। কিন্তু তারা বাংলাদেশপন্থী নয়। এ সরকার দখল ও মুনাফায় উন্মাদ হয়ে সুন্দরবনকে নিয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎপ্রকল্প স্থগিতসহ দেশের জনগণকে এ সম্পর্কে ভুল বোঝানো বন্ধ করলে তবেই আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবো।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল হকের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বিমল বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশন সভাপতি মোশরেফা মিশু, অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ প্রমুখ। জাতীয় কনভেনশনে সুন্দরবন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধি, জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।
