দৈনিকবার্তা-গৌরনদী (বরিশাল), ২৫ নভেম্বর ২০১৫: টাকার অভাবে গ্যাংরিনে আক্রন্ত বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গুচ্ছ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা কালু খানের চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের রনাঙ্গন কাঁপানো যোদ্ধা কালু খান (৭০) আজ পরাজিত সৈনিক। গ্যাংরিনে আক্রান্ত হয়ে তার দু’পায়ে পঁচন ধরেছে। ঝরে পড়েছে উভয় পায়ের আঙ্গুলগুলো। তিনি পঙ্গুত্ব বরন করে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। চিকিৎস্যকরা বলেছেন তাকে বাঁচাতে হলে পা ২টি দ্রুত কেটে ফেলতে হবে। এ জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। কিন্ত মুক্তিযোদ্ধা কালু খানের অসহায় পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসার টাকা যোগার করা সম্ভব হচ্ছেনা।
জানাগেছে, গৌরনদী উপজেলার পিংগলাকাঠি গ্রামের মৃত ইয়াসিন খানের পুত্র কালু খান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশ রক্ষার জন্য পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তিনি ভারতের বিহারে ট্রেনিং শেষে এলাকায় ফিরে নিজাম বাহীনীতে যোগ দেন। এরপর গৌরনদী ও আশপাশ এলাকায় পাকহানাদারদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। তিনি দক্ষতার সাথে এসএলআর, এসএমজি সহ আধুনিক আস্ত্রশস্ত্র চালাতে পারতেন বিধায় নিজাম বাহিনীতে তার সুনাম ছিল। লেখাপড়া জানতেন না বিধায় স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে তার ভাগ্যে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে কোন চাকুরী জোটেনী। ক্ষুদ্র ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জমা-জমি না থাকার কারণে নলচিড়া গুচ্ছ গ্রামে (সরকারী আবাসন এলাকায়) তিনি বসবাসের সুযোগ পান।
মুক্তিযোদ্ধা কালু খান জানান, ৩ মাস আগে তার দু’পায়ে পঁচন ধরে এবং উভয় পায়ের সবকটি আঙ্গুল ঝরে পরে। কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাকে বাঁচাতে হলে তার উভয় পায়ের হাটুর নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে। এ জন্য কমপক্ষে ২ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কালু খানের অসহায় পরিবারের পক্ষে এত টাকা যোগার করা কোনক্রমে সম্ভব হচ্ছেনা। তাই বাঁচার তাগিদে মুক্তিযোদ্ধা কালু খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।