Fakhrul-Islam-Alamgir

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬  ডিসেম্বর ২০১৫: প্রতিকূল পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে পৌরসভা নির্বাচনে করছে বিএনপি বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, মহিলা দলের সাধারন সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।ফখরুল বলেন, সব প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি। দিন দিন গণতন্ত্রের পরিধি সংকুচিত হচ্ছে। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে নেমেছি। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে দেশে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, সব গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা সম্ভব।

নির্বাচন কমিশন পৌর নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। তারা দলীয় ইশারায় কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ছাড়া এসব প্রতিহত করা খুব কঠিন হবে। এজন্য আবারও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আহ্বান করেছেন, আজ জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা প্রয়োজন।বাংলাদেশের যে বিপদ, যে রাজনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। আমি সেই ঐক্যের আহ্বান আবার জানাচ্ছি।অনেক ত্যাগের বিনিময়ে মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল- একথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের উচিত হবে সামনের দিকে এগিয়ে আসা, উদ্যোগ গ্রহণ করা। আলাপ-আলোচনা-সমঝোতার মাধ্যমে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকারগুলো ফিরে দেওয়া।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে একদিকে যেমন আমরা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারি, অন্যদিকে সব ধরনের সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করতে পারি। এটাই হচ্ছে আমাদের আজকের দিনের প্রত্যাশা।মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের যে আশঙ্কা করছি, যেটা আমাদের সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে, সেটা গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থায় প্রতিহত করা খুব কঠিন হবে।ডেমোক্রেটিক স্পেসটা বেশি প্রয়োজন। সেই কারণে আমরা বলেছি, আমাদের নেত্রী বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় ঐক্য দরকার। সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার জন্য, জনগণের মাধ্যমে নির্মূল করার জন্য এই জাতীয় ঐক্য খুব প্রয়োজন।

জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকার পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আমরা যে কথাটা বার বার বলেছি, সরকারের বক্তব্যের মধ্যে কনট্রাডিকশন সব সময় আছে। ইতোপূর্বে তারা বলতেন, বিএনপি সন্ত্রাসী-জঙ্গি দলে পরিণত হয়েছে। জঙ্গিবাদের কথা বলেছেন শুধু না, তারা জঙ্গিবাদ আছে বলে কোর্টে ট্রায়াল করছেন।আপনারা দেখেছেন কি না জানি না- ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জ থেকে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।তারা আইএসের সঙ্গে জড়িত বলে আদালতে তাদের ট্রায়ালেও নিয়ে আসা হয়েছে। এটা হচ্ছে স্ববিরোধী কথা-বার্তা। তারা তাদের সুবিধা অনুযায়ী কথা বলেন।

দেশের মানুষ এতো বোকা নয়।শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সদ্য কারামুক্ত মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন, আমি যখন কারাগারে যাই, ওজন হারিয়ে আসি। কারাগারে আমার বোধহয় স্যুট করে না। সেখানে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়ি। খুব একটা ভালো নেই, তবে চলার মতো তো আছে। চিকিৎসার জন্য আবার বিদেশে যাবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রতি মাসে আমার রক্ত পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে।গত ২৪ নভেম্বর একটা তারিখ ছিল। আমি কারাগার থেকে বেরুতে পারিনি। নতুন তারিখ এখনও পাইনি, পেলে যাব।