MP-2

দৈনিকবার্তা-পাথরঘাটা, ১০ জানুয়ারি ২০১৬: শনিবার দিনভর নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে কলাপাড়ার কুয়াকাটার মম্বিপাড়ায় যুগ পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ১২৮তম জন্ম মহা মহোৎসব ও বন ভোজন উৎসব ২০১৬ অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সান্ধকালীন বিনতি প্রার্থনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরি সমাপ্তি ঘটে।

সাগর কন্যা কুয়াকাটার মম্বিপাড়ায় সমুদ্রের কোল ঘেষে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অবস্থিত এ সৎসঙ্গ কেন্দ্র। নিঃসন্দেহে দক্ষিননাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মন্দির এটি।এ সৎসঙ্গ কেন্দ্রেটি হিন্দু সম্প্রদায়ের পবিত্র তীর্থস্থান হলেও এটি সকল ধর্মের ও বর্নের মানুষের মনকে কাছে টানে।১০সহস্রাধিক পূন্যার্থী ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এ উৎসবকে ঘিরে। কলাপাড়া সৎসঙ্গ শাখার প্রতিটি গুরু ভ্রাতা ও ভগ্নিগনের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। য়াকাটা চৌরাস্তা থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার পূর্বদিকে মম্বিপাড়ায় পাঁচ দশমিক ৮০ একর জমির ওপর প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০০৮ সালে এ সৎসঙ্গ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।মন্দিরটি দক্ষিনমূখী অবস্থিত।মন্দিরের মুল ভবনের তিন দিক সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।মন্দিরের সামনে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বাগান।মন্দিরের সামনে ডানদিকে আচার্য্যদেবের অর্শিবাদ পুষ্ট বেল গাছ।সৎসঙ্গ মন্দিরে প্রতি বছর যুগাবতর শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের জন্ম মহামহোৎসব ও বনভোজন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তিনতলা মন্দির ভবনের মাঝ দিয়ে রয়েছে দোতালায় ওঠার সু বিশাল সিঁড়ি। সেখান থেকে তৃতীয় তলায় উঠতে দুই দিক দিয়ে বয়ে গেছে আলাদা সিঁড়ি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় ব্যাপক ভক্ত সমাগমের কথা বিবেচনা করে ভবনের নিচতলায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল অতিথিশালা।মন্দিরের ঠিক পিছন দিকে (উত্তর পাশে) রন্ধনশালা। বনভোজন উৎসবে আগত ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ সকলের জন্য রয়েছে আনন্দ বাজারের প্রসাদ বিতরনের ব্যাবস্থা।

এ মন্দিরে ৯ জানুয়ারি শনিবার দিনভর শ্রী শ্রী অনুকূল চন্দ্র ঠাকুরের জম্মোমহোৎসব ও বনভোজনে ভক্তদের মিলন মেলা বসেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ও স্থানীয় হাজার হাজার হিন্দু নর-নারী,লঞ্চ যোগে, বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মটর সাইকেল নিয়ে উৎসবে যোগ দিতে আগের দিন শুক্রবার থেকে কুয়াকাট মম্বিপাড়া সৎসঙ্গ কেন্দ্রের মন্দিরে আসতে শুরু করেছে। এ উৎসবে প্রায় ৮/১০ হাজার পূর্নার্থীর সমাগাম ঘটে। উৎসবে আগত হিন্দু নর ও নারী পূজা -অর্চনা শেষে গঙ্গার জলে(সমুদ্র সৈকতে)পূণ্যস্নান সেড়ে দুপুরে আনন্দ বাজারের প্রসাদ নিয়ে বিকেলে অনেকে বাড়ি ফিরে যায় আবার অনেকে মন্দির আঙিনায় ওইদিন থেকেও যায়।

শনিবার উষালগ্নে উষাকীর্ত্তন,প্রাতকালিন বিনতি প্রার্থনা অন্তে মহাভোগের প্রসাদ বিতরন করা হয়,চলে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপি ভক্তিমূলক সংগীত অনুষ্ঠান,সমবেত বিনতি প্রার্থনা,সাধারন ধর্মসভা,সংগীত অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত সংগীত শিল্পীগন। সাধারন ধর্মসভায় সভাপতিত্ব করেন মম্বিপাড়া সৎসঙ্গ কেন্দ্রের সভাপতি সূধন্য কর্মকার গোসাই সহ প্রতি ঋত্বিক।দুপুরে আগত ভক্তদের মাঝে আননদ বাজারের প্রসাদ বিতরন করা হয়। কুয়াকাটার মম্বিপাড়া সৎসঙ্গ কেন্দ্র মন্দিরের পুরোহিত চিত্তরঞ্জন আচার্য্য বলেন,মন্দিরে প্রতি নিয়ত সকাল-সন্ধ্যায় প্রার্থনা করা হয়। প্রতিদিন এখানে লোকজন আসে তবে প্রতি শুক্রবার দর্শনার্থীদের সব চেয়ে বেশী সমাগম ঘটে। মম্বিপাড়া সৎসঙ্গ কেন্দ্রের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সূধন্য কর্মকার গোসাই এস.পি,আর জানান,মন্দিরে আগত দর্শনার্থীদের পূজা-অর্চনা শেষে পূণ্যস্নানের জন্য সাগর পাড়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মান ও সাগর পাড়ে উন্নত মানের ঘাটলা তৈরি এবং মন্দিরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাবস্থা করার জোর দাবি জানান। তিনি আরো বলেন,কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে মম্বিপাড়া মন্দির পর্যন্ত সড়কের পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা এখনও কাঁচা থাকায় ভক্ত ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষায় যেমন রাস্তা কর্দমাক্ত হয়, তেমনি শুকনো মৌসুমে ধূলা বালিতে চলাচল দূরহু হয়ে পরে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী আ.মান্নান বলেন,এবছর এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।অনুমোদন পাওয়া গেলে রাস্তা নির্মান কাজের জন্য দরপত্র আহবাবান করা হবে।বাকি রাস্তা পরবর্তীতে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।