Asadujaman_kamal

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকেও দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্র্যাব) নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে তার আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কামাল বলেন, এক্সচেইঞ্জ করে কাউতে দিতে হবে বা আনতে হবে তা নয়। যে বিদেশিদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের কয়েকজন আমাদের কারাগারে রয়েছে। যাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের ফেরত পাঠাতে আমরা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসগুলোতে যোগাযোগ করি।

দুবাইয়ে থাকা ভারতীয় মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত দাউদ মার্চেন্টের ক্ষেত্রেও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাউদ মার্চেন্টের সাজা শেষ হওয়ার কথা বললেও বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে করা মামলার রায়ই এখনো হয়নি। অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ধরা পরার পর গত সাত বছর ধরে তিনি এ দেশে রয়েছেন।গত বছর ৯ ডিসেম্বর ৫৪ ধারার একটি মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দাউদ মার্চেন্টের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে, যা বছরের শেষভাগে গণমাধ্যমে আসে।এরপরই উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার বিনিময়ে সাত খুনের আসামি নূর হোসেনকে ফেরানোর মতো দাউদ মার্চেন্টসহ কয়েকজনকে ভারতের হাতে তুলে দিয়ে সালাহ উদ্দিনকে ফেরানো হচ্ছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়।

ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদপত্রে আসা খবরে বলা হয়, গত নভেম্বরে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে আসামি প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার পরই দাউদ মার্চেন্টের মামলা তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ। ভারত তাদের জঙ্গি সংগঠন আসিফ রেজা কমান্ডো ফোর্সের নেতা মাওলানা মনসুর আলী হাবিবুল্লাহ, মুফতি ওবায়দুল্লাহ ওরফে আবু জাফর, মাওলানা এমাদুল্লাহ এবং কলকাতার সন্ত্রাসী জাহিদ শেখ ও আরিফ হুসাইনকে ফেরত চাইলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি দিপু, চট্টগ্রামের শিবির নেতা সাজ্জাদ হোসেন, চরমপন্থী নেতা মুক্তার হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে ফেরত চাওয়া হয় বলে গণমাধ্যমের খবর। অবশ্য এ বিষয়ে দুই সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনো আসেনি। মুম্বাইয়ের সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমারকে ১৯৯৭ সালের ১২ অগাস্ট আন্ধেরি এলাকার একটি মন্দির থেকে বেরিয়ে আসার সময় গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।ওই মামলায় সন্দেহভাজন ভাড়াটে খুনি দাউদ মার্চেন্ট গ্রেপ্তার হলে ২০০২ সালে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দাউদ আপিল করেন। ২০০৯ সালে ১৪ দিনের পারোলে মুক্তি পাওয়ার পর পালিয়ে যান তিনি।ওই বছরের ২৮ মে ভারত সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক সহযোগীসহ দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের পুলিশ। পাসপোর্ট আইনে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।

এর আগে নারয়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হয়।বাংলাদেশে আটক ভারতের সংগীত পরিচালক গুলশান কুমার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সুস্পর্ক আছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ভারত সরকার যখন চাইবে তখন আমরা দাউদ মার্চেন্টকে হস্তান্তর করবো।এসময় আরো সতর্কতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করতে ক্র্যাব সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাভলু, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম লাভলুসহ ক্র্যাবের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।