10-04-16-Meet The Press_Power Division-2

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, সরকার পরিবেশ ও জনস্বার্থ সংরক্ষণ করেই সব কটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন করবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চলছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা প্রয়োজন। এ জন্য সবার সহযোগিতা চান তিনি। এলাকাবাসীর প্রবল আপত্তি থাকলেও বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী।

রোববার বিকেলে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎসচিব মনোয়ার ইসলাম এবং বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।ড. ইলাহী বলেন, কাছেই সমুদ্র এবং আবাসন কম ফলে সব দিক বিবেচনায় বাঁশখালীতে নির্ধারিত স্থানেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।অনুষ্ঠানে বলা হয়, কয়লাভিত্তিক প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধীনে যেসব জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে তাঁরা আধুনিক জীবন যাপন করতে পারেন। এ ছাড়া এসব প্রকল্প থেকে স্থানীয় জনগণের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম থেকে তিন পয়সা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বছরে ৩২ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এই টাকা স্থানীয় অধিবাসীদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। তাই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থানীয় জনগণের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে।উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎসচিব অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

উল্লেখ্য, এস আলম গ্রুপের ওই বিদ্যুকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে গত সোমবার ত্রিমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে চার জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকে। এ ঘটনার পর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, প্রকল্পটি অন্যখানেও সরিয় নেয়া হতে পারে।এদিকে রোববার প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, কিছু উদ্ভট চিন্তাভাবনা আছে। এগুলো কোথা থেকে আসে জানি না। উদ্ভট কথা বলে অযথা কতগুলো মানুষের জীবন পর্যন্ত নিয়ে নেওয়া হলো। এটা দুঃখজনক।

অপরদিকে প্রকল্প বাতিলে সরকারকে ২৫ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে উল্টো ১৫ দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছে স্থানীয় বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটি’। গতকাল শনিবার স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় জানান কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী।এর আগে সাতকানীয়া সার্কেলের এসপি কামরুল হাসান, বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ কবির লিটনের সঙ্গে বৈঠক হয় বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটি’র। এসপি জানান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তদন্ত করা হবে। এই আশ্বাসের ভিত্তিতেই আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে তারা।

কমিটির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করবেন। প্রতিবেদনে পরিবেশ ও মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না এমন নিশ্চয়তা পেলেই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলনে থেকে সরে আসা হবে, অন্যথায় আবারো আন্দোলন শুরু হবে।