heatwave at capital-enewsbdpress

চৈত্রের দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারাদেশের জনজীবন—বুধবার রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।ঢাকা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ রকম তাপমাত্রা আরো ২ থেকে ৩ দিন চলতে পারে। সোমবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গায় মারা গেছেন দুই জন।চৈত্রের শেষ কয়েক দিনে সারাদেশের তাপমাত্রার পারদ বেড়েছে হু হু করে। দুঃসহ গরমে দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত তিন দিনে চুয়াডাঙ্গা ও এর আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।

মঙ্গলবার এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরো দু’একদিন এ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। দেশের উত্তরাঞ্চল এলাকায় ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। তিনদিনে চুয়াডাঙ্গায় গরমে মারা গেছে এক বৃদ্ধাসহ দুই জন।  রাজশাহীতে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ডাবের পানি, আখের রস ও রাস্তার পাশের ঠাণ্ডা পানীয় খেয়ে একটু স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করছেন মানুষ।তীব্র গরমে যশোরের জনজীবনও অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ। এখানকার তাপমাত্রাও ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামে করছে।গরমে হাসফাস করছে, সাধারণ মানুষ। হালকা বাতাস থাকলেও প্রখর তাপে শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে দ্রুত। সবচেয়ে করুণ অবস্থা খেটে-খাওয়া মানুষের।

রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকাতেই তাপের এই দাপট চলছে। ফলে, হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর ভিড়। রাজধানীর মহাখালীতে আই সি ডি ডি আর বি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ডায়রিয়া-কলেরা রোগীর সংখ্যা এখন দ্বিগুণ।চিকিৎসকরা বলছেন, পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে পথের ধারের পানীয় থেকে বিরত থাকা উচিত। লু হাওয়ায় উত্তপ্ত গোটা দেশ। চৈত্রের খরতাপে ফেটে চৌচির ফসলি মাঠ। আর এতেই চিন্তার রেখা কৃষকের কপালে। তারা বলছেন, এই অবস্থায় সেচ দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না ক্ষেতের ফসল।তারপরও, কৃষি বিভাগের পরামর্শ, জমিতে আরও বেশি সেচ দেয়ার।চারিদিকে চৈত্রের খরতাপ। ফেটে চৌচির ফসলি মাঠ।ভ্যাপসা গরমে বাতাসে আদ্রতা কমে যাওয়ায় শুকোন মাটিতে বাড়তে পারছেনা পাট ও ভুট্টা গাছ। তীব্র রোদে পুড়ে যাচ্ছে মাঠের ফসল। ঘন ঘন সেচ দিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারছেন না নাটোরের কৃষক।

সিরাজগঞ্জে ধান ভাল ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ধানের পরাগায়নে ক্ষতি হচ্ছে। আগে ভাগে ধান পেকে যাচ্ছে ধান। এতে ধানে পোকার আক্রমণ ও চিটা দেখা দিয়েছে।কুষ্টিয়াতেও তাপামাত্রা উর্ধ্বমুখি। ফলে আমের বোটা ঝরে যাচ্ছে। হুমকির মুখে বোরো ও আমনসহ অন্যান্য ফসল। বৈরি আবহাওয়ায় ফসল বাঁচাতে জমিতে বেশি বেশি সেচ দেয়ার পরামর্শ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার।উত্তরের জনজীবন অসহ্য করে তুলেছে চৈত্রের শেষে কাঠফাটা রোদ। প্রখর রোদ আর তীব্র গরম ে থেকে বাচাতে একটু শীতল ছায়া, ঠাণ্ডা পানি আর মৌসুমি ফলই রংপুর অঞ্চলের মানুষের এখন ভরসা।

গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে। অন্যদিকে, খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।তীব্র গরম আর খাঁ খাঁ রোদে পুড়ছে রংপুর অঞ্চল। বইছে গরম বাতাস। বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসা ধুলোবালি যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ফুটছে মানবদেহে। শান্তি নেই ঘরে। চলা দায় রাজপথে।কাঠফাটা রোদে ওষ্ঠাগত মানুষের প্রাণ। খেটে খাওয়া ম্রমিকের জীবন বিপর্যস্ত। অনেকটা ফাকা নগরীর রাস্তাঘাট।আবহাওয়ার এ বৈরিতা এবং তাপমাত্রার এ অস্বাভাবিকতা আরো বেড়ে মৃদু তাপদাহের আশঙ্কা করছেন রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী।তীব্র গরমে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগ বালাই। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে ডাইরিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ।তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে মানুষ ছুটছে একটু শীতল ছায়া আর বিভিন্ন ঠাণ্ডা ফলমূলের দিকে। মানুষের নাভিশ্বাস উঠলেও মৌসুমি ফল বিক্রেতাদের যেন পোয়াবারো। উল্লেখ্য, গত ১ সপ্তাহ ধরে রংপুরের গড় তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রিতে উঠানামা করছে।