জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

যেসব পেট্রোল পাম্প জ্বালানি কৃত্রিম তেলের সঙ্কট সৃষ্টি করবে এবং দাম বেশি নেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছেও বলেও জানিয়েছেন তিনি।বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তেলের কমানো দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তেল বিক্রি বন্ধ রাখলে ও দাম বেশি নেয়া হলে অভিযুক্ত পেট্রোল পাম্পের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানান তিনি। এসময় নসরুল হামিদ বলেন, ‘আগামী ১০ দিনের মধ্যে তেলের কমানো দাম কার্যকর হবে। এর আগে গত ৪ এপ্রিল জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে।প্রতিমন্ত্রীর এ ইঙ্গিতের পরই বিপিসির তেল বিক্রিতে ভাটা পড়ে। দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট। রাজধানীর পেট্রোল পাম্পগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর পাম্পগুলো তেল বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে তাদের তেল বিক্রি প্রায় অর্ধেক কমেছে। জানা গেছে, লোকশানের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত তেল কিনে রাখছেন না। শুধু দৈনিক হিসেবে তেল কিনে বিক্রি করছেন।

এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক বাংলামেইলকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী আগে একবার দাম কমনোর আগাম বক্তব্য দিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি করেছেন। আজ আবার একই কথা বলেছেন। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। কারণ, লোকসান করে তো তেল বিক্রি করা সম্ভব না।সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য কমানোর আগাম ঘোষণায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোল পাম্প মালিকরা। এতে পরিবহন ব্যবহারকারীরা বিপাকে পড়ছেন। বিশেষ করে বিকেলের পর অনেক পাম্পেই জ্বালানি মিলছে না।সূত্র জানায়, এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নাজমুল হক বলেন, লোকসান করে তো তেল বিক্রি করা সম্ভব না। যে কোনো সময় তেলের দাম কমতে পারে। এখন যদি আমি তেল কিনে রাখি, আর দাম কমে যায় তাহলে বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে হবে। জেনে-শুনে কে লস করতে চায়।তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদ থেকে দাম কমানো-বাড়ানোর বিষয়ে আগাম বক্তব্য দেয়া উচিত নয়।

বিপিসির তথ্য মতে, প্রতিমন্ত্রীর দাম কামনোর ঘোষণার দিন (৪ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানটি অকটেন বিক্রি করেছে ৫৫০ টন, আর ৬ এপ্রিল বিক্রি হয়েছে ২৫৫ টন। দুই দিনের মধ্যে বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। এদিকে ৪ এপ্রিল ডিজেল বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার ১৫৩ টন আর ৬ এপ্রিল বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৯৬৩ টন। দুই দিনে ৪ হাজার টনেরও বেশি বিক্রি হ্রাস পেয়েছে। পাম্প মালিকরা বলছেন, আগেভাগে দাম কমানোর ঘোষণায় বিক্রি কমে গেছে।বুধবার নসরুল হামিদ বলেছেন, নববর্ষের দশ দিনে মধ্যে পেট্রোল-অকটেনে লিটার প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা আর ডিজেলে লিটারপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা কমানো হবে।