আওয়ামীলীগের পাঁচ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিস্কার

পাবনা জেলার ৯ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই চলমান ইউপি নির্বাচনের চেয়াম্যান প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চেয়াম্যান প্রার্থী নির্ধারন নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের ভোট নিয়েও চলছে নাটক, স্বজনপ্রীতি, সহিংস ঘটনা এবং অর্থ বানিজ্যর অভিযোগও উঠেছে। কিছু কিছু ইউনিয়নে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটিগুলোর বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে জামাত-বিএনপির দলীয় লোকদের আওয়ামী লীগের চেয়ামম্যান প্রার্থী করায় মাঠ পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মিদের মধ্যে মারাতœক অসন্তোষ এবং মারামারী, গুলাগুলি, বোমাবাজির মত সহিংস ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ সহিংস ঘটনা ঘটেছে গত মঙ্গলবার সদর উপজেলার টেবুনিয়া বাজারে মালিগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাজানো তৃণমূলে ভোট নিয়ে। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ অর্থের বিনিময়ে বিএনপির সক্রিয় এক কর্মিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বানানো হচ্ছে। স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মিদের প্রতিরোধের মুখে তৃণমূল ভোট পন্ড হয়ে যায়। এ ছাড়াও প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করছে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। এ সব কারনে দলের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসছে বলে বিজ্ঞজনেরা মত প্রকাশ করছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় পাবনা প্রেস ক্লাবের ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সন্মেলেন পাবনার কাশিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ খোরশেদ আলম অভিযোগ করেন রাজাকার পুত্রের হাতে নৌকা প্রতীক দিয়ে সমালোচনায় ঝড় তুলেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি। পেশিশক্তি প্রয়োগ, তৃণমূলের ভোটে প্রভাবিত ও আর্থিক অনৈতিক লেনদেন করে তৃণমূল ভোটে রাজাকার পুত্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মীর মঞ্জুর এলাহীকে জেতানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গত ৮ এপ্রিল জেলার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তৃণমূল সদস্যদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনধিকার চর্চার মাধ্যমে ৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ২০ জন ভোটারকে সাথে নিয়ে আওয়ামীলীগের স্থানীয় সাংসদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু নিজ পছন্দের প্রার্থী রাজাকার পুত্র মীর মঞ্জুর এলাহীর জন্য অন্য ভোটারদের চাপ প্রয়োগ, হুমকি ধামকি, এমনকি ভোট গ্রহণের দিন নিজে ব্যালট বাক্সের কাছে উপস্থিত থেকে ভোটকে প্রভাবিত করেছেন। লিখিত বক্তব্যে খোরশেদ আলম বলেন, ওই এলাকার মরহুম মীর মোহাম্মদ আলীর (ঠান্টু মিয়া) যিনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঐতিহাসিক ডাববাগান যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তারই পুত্র মীর মঞ্জুর এলাহী যিনি স্থানীয় বিএনপি ও জামাতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ব্যবসায়ীকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ভাবে তৃণমূলের ভোট গ্রহণ হলে এক তৃতীয়াংশ ভোট নিজে পেতেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ তৃণমূল ভোটারদের দাবী, রাজাকার পুত্রকে বাদ দিয়ে ত্যাগী আওয়ামীলীগের যে কোন ব্যক্তিকে মনোনয়নের জন্য দাবী জানান। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম মিয়া, আওয়ামীলীগ নেতা হাজ্জাদ মিয়াসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মি উপস্থিত ছিলেন।