দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-1

রমজান শুরুর আগেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে অভিযোগ করে এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকেরাই দায়ী বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ দাবি করেন।

রিজভী বলেন, সামনের মাস থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হচ্ছে। অথচ রমজানের প্রাক্কালেই শনিবার একদিনেই রসুনের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৭০ টাকা অর্থাৎ ১৬৭ শতাংশ, ছোলার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। আর পেঁয়াজসহ শাক-সবজির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কেজি প্রতিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা।তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম ইতোমধ্যেই যেভাবে বেড়েছে তাতে এবারের রমজান মাসে সাধারণ মানুষের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, নেই কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা। ফড়িয়া-দালাল-মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা সবকিছু নিজেদের ইচ্ছেমতো নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকেরাই এই সমস্ত কৃষিপণ্যবাজার অশুভ সিন্ডিকেশনের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, দেশে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বেতন সম্প্রতি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির বেতন-ভাতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ওপর এর খড়গ নেমে এসেছে। কারণ, যারা বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পাননি তারাই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী।এদের বেতন কিছুটা বৃদ্ধি হলেও জীবনযাত্রার মান এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, এই বেতন বৃদ্ধিতেও তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাড়ি ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে এদের ক্রয়ক্ষমতা এখন চরম সঙ্কটাপন্ন। বৃহত্তর জনসমাজে আর্থিক ভারসাম্যহীনতা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

নিম্নবিত্তরা এখন ভবঘুরে ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়েই চলছে। অনেক টাকা দিয়ে এখন সামান্য পরিমাণ আনাজ-পাতি কিনতে হয় ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র। সাধারণ মানুষের মধ্যে এক গুমোট পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের এখন নাভিঃশ্বাস উঠেছে। উদওে প্রচণ্ড ক্ষুধা থাকলেও তারা মুখে কিছু বলতে পারছে না। নিম্নবিত্তরা এখন রাস্তায় ভবঘুরে ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে।রিজভী বলেন, দেশে আবারো দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আবারো সেই জয়নুল আবেদিনের চিত্রের মতো ডাস্টবিনে কুকুর-মানুষ একসাথে খাবার খুটে খাচ্ছে। ঢাকার নাভিমূলের যে সমস্ত রাস্তা ভিআইপি রোড বলে পরিচিত, যেসব রাস্তা দিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা যাতায়াত করেন, সে সমস্ত রাস্তার আশেপাশেই ডাস্টবিনে ক্ষুধার্ত মানুষ খাদ্য খুঁজে বেড়াচ্ছে।এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হারুন-অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম পটু, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।