খালেদা-জিয়া232

খালেদা জিয়াবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার বন্য প৪্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বর্বর ও পৈশাচিক হত্যার ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। এটি বিরোধী দলের প্রতি তাদের স্বভাবসুলভ অন্ধ হিংসার বহি:প্রকাশ। সরকারের বক্তব্যের ধরন দেখে মনে হয়, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের আস্তানা ধ্বংস না, তাদের গ্রেপ্তার না করে বরং এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা। চটজলদি বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর কারণেই কাণ্ডজ্ঞানহীন জঙ্গিগোষ্ঠী উৎসাহিত হয়ে প্রাণবিনাশী কর্মকাণ্ড পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে।

গত শুক্রবার রাতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের চাকপাড়া গ্রামের একটি বৌদ্ধ বিহারে ধাম্মা ওয়াসা মং শৈ উ চাক নামে একজন ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি এই নিন্দা জানান এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ভোটারবিহীন সরকার দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য। আর সে জন্যই তারা দানবীয় চক্রান্ত এঁটে চলেছে। কারণ আওয়ামী লীগ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, হিংসা ও হত্যায় উৎসাহী একটি দল। মানব সভ্যতা বিনাশী মতাদর্শে বিশ্বাসী জঙ্গিদের উৎপাত শুরু হয় আওয়ামী লীগ আমল থেকেই। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করে। তিনি বলেন, এ দেশ কেন জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হলো? আওয়ামী শাসনামলেই কীভাবে বেআইনি, সভ্যতা, প্রগতি বিরোধী অশুভ জঙ্গিগোষ্ঠীর বিচরণ এত তীব্র হলো? কেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ও ধর্মগুরুদের জীবন যাচ্ছে, আর কত দিন সাধারণ জনগণকে ভয়ার্ত পরিবেশের মধ্যে জীবন-যাপন করতে হবে, এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা সরকার হারিয়ে ফেলেছে। কারণ গণবিরোধী, ভোটারবিহীন সরকার আসল কাজের পরিবর্তে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই বেশি ব্যস্ত।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী মনে হয় অশুভ পশুশক্তির কাছে নি:স্বার্থ আত্মনিবেদন করেছে। বিদেশি হত্যা থেকে শুরু করে শিয়া সম্প্রদায়, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মগুরুদের ওপর নৃশংস আক্রমণ ও সিরিজ হত্যা সরকারের ভ্রুক্ষেপহীনতার কারণেই ক্রমাগতভাবে চলমান থাকছে। তিনি বলেন, আমাদের ভূখণ্ডের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ ও সংস্কৃতির পরম্পরায় সম্প্রীতি ও পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছাবোধ এক অনবদ্য জ্বাজল্যমান উপাদান। সেখানে সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও সংঘাতের কোনো অধ্যায় নেই। এটি একটি অতি সাম্প্রতিক প্রপঞ্চ।

খালেদা জিয়া বলেন, যে সরকার ভিন্নমতকে দমন করতে, সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্দয়ভাবে ব্যবহার করে চলেছে, সে সরকার নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থে লাশ আর রক্তপাতকে চিরস্থায়ী সঙ্গী করে নিতে যে দ্বিধা করবে না, তা বলাই বাহুল্য। জনমতকে তাচ্ছিল্য করে প্রধানমন্ত্রীর জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা, দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি ও একগুঁয়েমি এবং নিজ দলের লোকদের অনাচারকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণেই দেশে অপরাধ ও দুষ্কৃতকারীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের নির্বিকার আচরণের কারণেই একের পর এক হত্যাকাণ্ডগুলোতে দেশের রাজনৈতিক কুজ্ঝটিকা ঘন ও রহস্যময় হয়ে উঠেছে। দেশে জঙ্গিদের অস্তিত্ব নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যেও জনমনে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আসলে সরকার কোনো নীল নকশা ধরে এগোচ্ছে?