ক্যান্সারের টিকা তৈরির পথেক্যান্সারের সর্বজনীন একটি টিকা ‘তৈরির পথে রয়েছে’ বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ টিকা দিয়ে যে কোনও ধরনের ক্যান্সারই দূর করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তারা।বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা দেহের ইমিউন সিস্টেমকে টিউমারের সঙ্গে লড়াই উপযোগী করার একটি নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছেন। ঠিক যেমনটি ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। নেচার’ জার্নালে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল এই কৌশলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ক্যান্সারের জেনেটিক আরএনএ কোডের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা এ টিকা তৈরির চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।

কোষে প্রোটিন উৎপাদনে সহায়তাকারী আরএনএ কে ইমিউনোথেরাপি হিসাবে তিন রোগীর ওপর ব্যবহার করে চমৎকার সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ প্রক্রিয়ায় তাদের দেহে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের উপযোগী ‘কিলার’ টি-সেল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।ইঁদুরের ওপরও গবেষণা চালানো হয়েছে। এতে করে ইঁদুরের দেহেও টিউমারের বিরুদ্ধে সক্রিয় লড়াইয়ে এ ব্যবস্থা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

জার্নালের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোগীদের ওপর টিকা প্রয়োগের পরই যে ক্যান্সার ভাল হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে তা নয়। তবে এক রোগীর টিউমার টিকা প্রয়োগের পর ছোট হয়ে গেছে। আরেকজন রোগী, যার টিউমার অপারেশন করে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, তাকে টিকা প্রয়োগের ৭ মাস পর সে ক্যান্সারমুক্ত হয়েছে।আটটি টিউমার দেহের ত্বক থেকে ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়া আরেক রোগীকে টিকা দেওয়ার পর সেগুলো পরবর্তীতে আর ছড়ায়নি।ক্যান্সারের এ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ফ্লুয়ের মত উপসর্গ দেখা গেছে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপির যে মারাত্মক ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তার তুলনায় এটি তেমন ভয়াবহ নয়।ফলে, গবেষণার এ ফলকে ক্যান্সারের সর্বজনীন একটি টিকা তৈরির ক্ষেত্রে খুবই ইতিবাচক ধাপ বলে গবেষকরা বর্ণনা করলেও তারা বলছেন, রোগীদের ওপর এর সত্যিকারের উপকারের প্রমাণ পাওয়া এখনও অনেক দূরের পথ।জার্মানির গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন।