নতুন করে রিমান্ডে নেওয়া যাবে না আসলামকে হাইকোর্টইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যারা সহযোগিতা করেছে, তাদের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মোসাদের সাথে বৈঠকের বিষয়ে আসলাম চৌধুরী অনেক তথ্যই দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সব তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরী আমাদের জানিয়েছেন, ভারতে মোসাদের কার কার সাথে বৈঠক হয়েছে, কারা তাকে ওখানে যেতে উৎসাহিত করেছেন, কাদের সহযোগিতায় তিনি মোসাদের সাথে ওই বৈঠকে গিয়েছেন।’
যাদের ব্যাপারে আসলাম চৌধুরী তথ্য দিয়েছেন তাদের গ্রেপ্তার করা হবে কি না? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই। যেসব তথ্য পেয়েছি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিশ্চিত করা হবে। যাদের বিষয়ে তথ্যের সত্যতা পাওয়া যাবে, অবশ্যই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
গত ১৫ মে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে যুক্ত হওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গত ২৬ মে গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
ওই সময়  পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছিলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সরকারকে অজনপ্রিয় করে পতন ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।’
গতকাল বুধবার (৮ জুন) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসলাম চৌধুরীকে ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ঢাকা সিএমএম আদালত। গত ৩১ মে একই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন মেট্রোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট গোলাম নবী। এর আগে গত ১৬ মে আসলাম চৌধুরী এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. আসাদুজ্জামান মিয়ার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
অভিযোগে বলা হয়, আসলাম চৌধুরী গত ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহির্ভূত রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে দেখা করেন, যার কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আসলামকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, ওই সময় ভারতে অবস্থান করে মোসাদের এজেন্ট মেন্দির সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।