ফুলবাড়ী সীমান্তে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় রোগাক্রান্ত গরুর মাংস

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খলিশাকোঁঠাল, বালাতারী, গজেরকুটি, ঠোষ বিদ্যাবাগিশ, নন্দিরকুটি জুম্মারপাড়, কাশিপুর, অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই ভারতে জবাই করা রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বাংলাদেশে আসছে। বিক্রি হচ্ছে ফুলবাড়ী, বালারহাট, গংগারহাটসহ গ্রামে গ্রামে। ফলে যেমন বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝূঁকি অন্যদিকে তিগ্রস্থ হচ্ছে দেশীয় কসাইরা। সীমান্ত একাধিক সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর চোরাচালান কমে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরদের কাছ থেকে গরু ক্রয় করে কসাইয়েরা হাট-বাজারে মাংস বিক্রি করছে।

গরুর মাংসের বর্তমান বাজার দর প্রতি কেজি ৪৭০-৪৮০ টাকা হওয়ায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের পে তা ক্রয় করে খাওয়া দুস্বার্ধ হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে সীমান্তের এক শ্রেণীর অসাধু চোরাকারবারীরা ভারতে রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে এনে উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামসহ বালারহাট, গোরকমন্ডল, বালাতারী, কুরুষাফেরুষা, শিমুলবাড়ী, ঠাকুরপাঠ, বোর্ডের হাট, টেপরির বাজার, আছিয়ার বাজার ও ফুলবাড়ী বাজারে বস্তাভর্তি করে এনে কম দামে বিক্রি করছেন। চোরাকারবারীদের পাচার করে দেয়ার সময় যে সমস্ত গরু রোগাক্রান্ত ও দূর্বল হয়ে হাঁটতে পারে না, অথবা বিএসএফের বুলেটের আঘাত প্রাপ্ত অথবা ককটেল ছোঁড়া আঘাতে অসুস্থ হয়ে পড়া গরু গুলোকে ভারতের গরু চোরাচালানকারীরা ভারতীয় সীমান্তে জবাই করে বাংলাদেশের চোরাকারবারীদের কাছে হাতবদল করে ১৪০-১৬০ টাকা দরে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি করছেন। মাংস গুলো বাংলাদেশে এনে প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ২০০-২৫০ টাকা দরে। ভারতীয় গরুর মাংসের দাম কম হওয়ায় ফলে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনসহ গোটা উপজেলার জনসাধারণ ভারতীয় গর“র মাংসের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছেন।

এ দেশীয় ভারতীয় গরুর মাংস বিক্রেতা জামাল মিয়া, নুর হোসেন, মোননাফ, মোজাহার আলী জানান, গরুর মাংসগুলো রোগাক্রান্ত গরুর নয়। যেসমস্ত গরু পাচার করে দেয়ার সময় কাঁটাতারে লেগে মারাত্মকভাবে জখম হয় ও দুর্বল হয়ে পড়ে সেই গরু গুলোই জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।ক্রেতা মন্ধসঢ়;ছার আলী বলেন, যাদের কাছে মাংস ক্রয় করছি তারা আমাদের বিশ্বস্থ লোক। কাজেই কোন রকম সন্দেহ করিনা। বালারহাট বাজারের মাংস ব্যবসায়ী (কসাই) খয়বর আলী ও শাহজাদা জানান, আগের মত আর গরুর মাংস বিক্রি করতে পারছি না। কারণ হিসাবে তারা বলেন, এখনতো ভাই ভারতীয় গরুর মাংস সয়লাব হয়ে গেছে। যেখানে প্রতিদিন দু’টো গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করতাম, এখন একটা গরুর মাংসই বিক্রি হয় না।

এ প্রসঙ্গে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার এরশাদুল হক জানান, ভারতের যেকোন মাংস না খাওয়াই ভালো। কারণ এ মাংস খেলে এ্যানথ্যাক্স, জলাতংক, অ্যাজমা, টাইফোয়েড, ডায়রিয়াসহ বড় ধরনের রোগ ছড়াতে পাড়ে।এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার সামছুল হক জানান, আমি শিমুলবাড়ীতে যোগদান করার মাত্র তিন চার দিন হল। কোনো গরুর মাংস পাঁচারকারীই এখনো আমার চোখে পড়েনি । তবে সব সময় সীমান্তে বিজিবির টহল জোড়দার অব্যাহত আছে।