বিএসএমএমইউ

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি অপূর্ণাঙ্গ জোড়া শিশুর (অপূর্ণাঙ্গ যমজ) অস্ত্রোপচারের জন্য ১৮ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিশু সার্জারি বিভাগ।১৮ সদস্যের টিমের মধ্যে উপদেষ্টা সার্জন হিসেবে রয়েছেন- শিশু সার্জারি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শফিকুল হক, অধ্যাপক ডা. মোঃ মতিউর রহমান ও অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, আরেকটি শিশুর শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশ নিয়ে জন্মানো মোহাম্মদ আলী নামের পূর্ণাঙ্গ শিশুটি চলতি বছরের ৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এই শিশু সম্পর্কে জানিয়েছে, একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু কিন্তু তার উপর ভর করে আছে আর একটি শিশুর পেটের নিচের অর্ধেকসহ শরীরের নি¤œাঙ্গ। উর্ধাঙ্গর মাথা, বুক ও দু’ হাত নেই অর্থাৎ আংশিক বা অপূর্ণাঙ্গ শিশুটি তার আংশিক অস্তিত্ব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশুর উপর ভর করে বেঁচে আছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষা একে বলা হয়, প্যারাসাইটিক টুইন বা অপূর্ণাঙ্গ যমজ।

প্যারাসাইটিক টুইন সমস্যা নিয়ে জন্মানো এ শিশুটির স্বাভাবিক জন্ম দেন বাগেরহাটের হীরামনি। এর আগে শিশুটির মা হীরামনি তিনটি সুস্থ স্বাভাবিক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মোহাম্মদ আলী হলো তাঁর চতুর্থ সন্তান। শিশুটির বাবার নাম মোঃ জাকারিয়া। অপূর্ণাঙ্গ যমজ শিশুটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ রুহুল আমিনের অধীনে ভর্তি রয়েছে। শিশুটির জন্মের তৃতীয় দিন ১০ মার্চ ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে সি ব্লকের ৫ম তলায় ৫ডি ওয়ার্ডে বিনা ভাড়ার ১৩নং বিছানায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, সেবিকাদের নিবিড় পরিচর্যায় শিশুটির চিকিৎসাসেবা চলছে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের সহায়তায় শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকবৃন্দ শিশুটিকে ভারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, অপূর্ণাঙ্গ শিশুটির একটি কিডনী, মূত্রাশয় ও পুঃলিঙ্গ রয়েছেÑ যা দিয়ে সে নিয়মিত প্রসাব করছে। অপূর্ণাঙ্গ যমজ শিশুটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নীরিক্ষা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

অপূর্ণাঙ্গ যমজ শিশুটির চিকিৎসকার বিষয়ে মোঃ রুহুল আমিন জানান, প্যারাসাইটিক টুইন সমস্যা নিয়ে জন্মানো শিশুটির চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান ।এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে প্যারাসাইটিক টুইন সমস্যা নিয়ে জন্মানো শিশুটিকে অপূর্ণাঙ্গ শিশু থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিশু সার্জারি বিভাগ।