সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কঠোর বাংলাদেশ

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্তোরাঁয় হামলার পর জঙ্গিরা যাতে প্রচার চালাতে না পারে সে জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহারে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের তরুণদের সঙ্গে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে যোগাযোগ করছে জঙ্গিরা।কর্তৃপক্ষ বলছে, গুলশানের হামলার ওই ঘটনা তাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তরুণদের জঙ্গি দলে ভেড়াতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের ভূমিকা বোঝা গেছে এতে। বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, জঙ্গিদের দলে ভেড়াতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম উর্বর ভূমি। আক্রমণটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। জঙ্গিরা তরুণদের এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে আকর্ষণ করছে।

গত শুক্রবার গুলশানে আক্রমণের ঘটনায় দায় স্বীকারকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে তরুণদের দলে ভেড়াচ্ছে।শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ইউটিউবকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) জসিম উদ্দিন রহমানীর ভিডিওসহ জঙ্গিদের প্রচার সংক্রান্ত ভিডিও সরাতে নির্দেশ দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনায় জসিম উদ্দিন রহমানীকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।গুলশান হামলার ঘটনায় যেসব জঙ্গিদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের অধিকাংশ তরুণ, প্রযুক্তি আসক্ত ও ধনী পরিবারের সন্তান হওয়ায় সহজেই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পেরেছে। এর মধ্যে জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের বাবার দাবি, তাঁর বিশ্বাস, ২২ বছর বয়সী সন্তানকে অনলাইন ব্যবহার করে দলে ভেড়ানো হয়েছে।

ইমতিয়াজ গত বছরে ফেসবুক ব্লগ বহার করে সব মুসলমানকে সন্ত্রাসী হওয়ার আবেদন করে এবং এতে যুক্তরাজ্য,কানাডা, মালয়েশিয়াতে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ভারতের এক প্রচারকের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে। রোহানের বাবা ইমতিয়াজ খান বুলবুল এএফপিকে বলেন, ‘আর সবার মতোই সাধারণ মুসলমান ছিল তার ছেলে। হয়তো ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে। সে কী কী ব্রাউজ করে তা কখনো পরীক্ষা করে দেখিনি। কেউ তাঁকে ব্রেন ওয়াশ করেছে।

গত বুধবার জঙ্গিদের প্রকাশ করা ভিডিও অনলাইনে শেয়ারের ওপর সতর্কতা জারি করে পুলিশ।ডিআইজি এ কে এম শাহিদুর রহমান বলেন, আইএস বা জঙ্গিদের সমর্থনে ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে কোনো ভিডিও, ছবি, বক্তব্য আপলোড, শেয়ার, মন্তব্য এমনকি লাইক দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে যদি এ ধরনের কার্যকলাপে যুক্ত পাওয়া যায় তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে আটকা পড়া বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করার আগে কয়েকজনকে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে ইতালিতে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে বেরিয়ে এসেছে।এদিকে, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যমে আইএস কিংবা জঙ্গিবাদ সমর্থনে কোনো ধরনের ভিডিও, ছবি, কোনো বার্তা আপলোড, শেয়ার, কমেন্ট অথবা লাইক দিলে ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে (আইসিটি) মামলা করা হবে।বুধবার বিকেলে পুলিশের সদরদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গুলশানে আর্টিসান রেস্টুরেন্টে হামলার পর ফের হুমকি দিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আইএস। এই ভিডিওতে তিন বাঙালি যুবককে হুমকি বার্তা দিতে দেখা গেছে। এসব ভিডিও খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে মনে করেই এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।বুধবার সকালে বিতর্কিত ওয়েবসাইট সাইটে’ প্রকাশের পর পুলিশ হেড কোয়াটারের ডিআইজি (মিডিয়া) একেএম শহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এসম্পর্কে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে শহিদুর বলেন, কোনো জঙ্গি সংগঠনের ভিডিও, ছবি বা পোস্ট সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে পোস্ট, শেয়ার বা লাইক দিলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে নজরদারি শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।প্রকাশিত ছবির মাধ্যমে অনেককেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে -এমন প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ছবি বা এ সম্পর্কিত কিছু শেয়ার করা যাবে, তবে তা যেন কোনোভাবেই জঙ্গিবাদ সমর্থনে না হয়।

প্রসঙ্গত, ঢাকার কূটনীতিকপাড়া গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে শুক্রবার (১ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল সসস্ত্র জঙ্গি ঢুকে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে রেস্টুরেন্টটি নিয়ন্ত্রণ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার এবং ২০ জনের জবাই করা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে ১৭ জনই বিদেশি। বাকিরা বাংলাদেশি। এ ছাড়া জঙ্গিদের প্রতিহত করতে গিয়ে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন খান।

অন্যদিকে,মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বিদ্যমান। যেকোনো বিদেশির ওপর এ ধরনের হামলা হতে পারে। বাংলাদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে মুখপাত্র জন কিরবি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ঢাকায় জঙ্গি হামলার ঘটনার সঙ্গে আইএস, না অভ্যন্তরীণ জঙ্গিরা জড়িত, সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তদন্ত করছে। তদন্তকাজ শেষ হোক, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানাক তদন্তে কী পাওয়া গেছে। তারপরই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা যাবে। তবে ঢাকায় যে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মুখপাত্র কিবরি বলেন, শালাকিয়ার ঘটনাটি নতুন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ চলমান জঙ্গি হামলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রথম কথা বলুক। পর্যাপ্ত তথ্য না পেয়ে কোনো মন্তব্য করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে, ৬ জুলাই মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশে ট্রাভেল অ্যালার্ট-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন মুখপাত্র। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলমান জঙ্গি হামলা এবং চরমপন্থী সহিংসতার বিষয়ে ভ্রমণের মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে একই ধরনের ট্রাভেল অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। তিনি জানান, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচলের ব্যাপারে বিধিনিষেধ ও বিশেষ সতর্কতা আরোপ করেছে।

জন কিরবি বলেন, জোর দিয়ে বলেন বাংলাদেশে ভ্রমণে ইচ্ছুক মার্কিন নাগরিকেরাও যেন দূতাবাস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো সতর্কতা অবলম্বন করেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিদেশে থাকা নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং নিরাপদে থাকার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নাগরিকদের যতটা সম্ভব তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি, যাতে তাঁরা ভ্রমণের আগে তথ্যবহুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলেছেন। গুলশান ঘটনা তদন্তে এফবিআই সহযোগিতা করবে বলেও জানানো হয়। ইতিমধ্যে এফবিআই তদন্তকাজে সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়েছে কি না, এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে হালনাগাদ তথ্য নেই। তদন্তের বিষয়টি দেখছে বাংলাদেশ।

এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি জঙ্গি তৎপরতাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বললেও গুলশানের অভিজাত রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনায় সরকারের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে পারে বলে সরকারের উচ্চমহলে আশঙ্কা আছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এমনটা মনে করে না সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল।

সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী তৎপরতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি এবং কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সন্ত্রাস মোকাবিলার চিন্তাভাবনা আছে।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘রাজনৈতিক সংলাপের’ প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা এবং জিম্মির ঘটনায় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তত্ত্বাবধানে কমান্ডো হামলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাতভর পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন এবং সর্বোচ্চ কম হতাহতের মাধ্যমে জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্ত করার জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ কেবল বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি দুশ্চিন্তা। যে ধরনের ঘটনা ঢাকার গুলশানে ঘটেছে, তা আমাদের দেশে নজিরবিহীন। এ পরিস্থিতিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দৃঢ় হাতে পুরো পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। তাঁর মতে, দুশ্চিন্তা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়।

ক্ষমতাসীন মহাজোটের নেতাদের মতে, বর্তমানের নাজুক পরিস্থিতিতে কেবল রাজনৈতিক দল নয়, সব শ্রেণি- পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেবল আওয়ামী লীগ বা ১৪ দল নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যাদের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান আছে, সেসব দলকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।

জানতে চাইলে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, এটাই শেষ না। আরও কিছু ঘটতে পারে। বিশেষ করে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর রায় কার্যকর হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের আশঙ্কা আছে।এ অবস্থায় জনগণকে মাঠে নামানো ছাড়া বিকল্প নেই। তাঁর মতে, পাড়ায়-মহল্লায় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি করতে হবে। কেবল জোট নয়, দলগতভাবেও মাঠে নামতে হবে। পাশাপাশি ১৪ দলের বাইরের দলগুলোকেও সন্ত্রাসবিরোধী কাতারে নিয়ে আসতে হবে।

মহাজোটের নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, সরকার জঙ্গি দমনে প্রশাসননির্ভর হয়ে পড়েছে। কেবল প্রশাসন দিয়ে তা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে জননির্ভরতা বাড়াতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সাংসদ জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একক কোনো রাজনৈতিক দলকে যুদ্ধ করার দায়িত্ব নেওয়া ঠিক নয়। এর জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। মহাজোটের বাইরে জঙ্গিবিরোধী সব মত-পথকে ঐক্যবদ্ধ করে সংলাপের আয়োজন করতে হবে। তা না হলে গুলশানের ঘটনা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা দূর করা সম্ভব হবে না।

সরকারের নীতিনির্ধারণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন মনে করেন, গুলশানের জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা বাংলাদেশে প্রথম হলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে তা সামাল দিয়েছে। বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডোরা মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীদের হত্যা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

উল্লেখ্য,গত শুক্রবার রাতে গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলায় বাংলাদেশিসহ অন্তত ২০ বিদেশি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার বাংলাদেশ পুলিশের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ছয় হামলাকারীও নিহত হন।সংঘটিত ভয়াবহ ঘটনায় বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি নির্মূলে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার ঈদের দিন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে হামলায় পুলিশসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন।শুক্রবারের ঘটনার রেশ না কাটতেই শোলাকিয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশকে আবারও শিরোনাম করেছে।