রাজধানীতে জেএমবির নারী উপদেষ্টাসহ আটক ৪

জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-এর (জেএমবি) নারী সদস্যরা ইয়ানত বা তহবিল গঠনের কাজে ব্যস্ত। জাকাত, ফিতরা, দান-খয়রাত ও গরীবদের সাহায্য করার কথা বলে এই ইয়ানত সংগ্রহ করে তারা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলে তাদের অর্থ সংগ্রহের কার্যক্রম। আর এই অর্থ ব্যয় হয় জঙ্গিদের থাকা-খাওয়া, হামলা, নাশকতা ও বিস্ফোরক কেনার কাজে। র‌্যাবের ভাষ্য, সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজন চার নারী জেএমবি’র কাছে তারা এসব তথ্য পেয়েছে।

গাজীপুর ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া ওই চারজন হলেন, আকলিমা রহমান মনি, ঐশী, ইশরাত জাহান মৌসুমী ওরফে মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘনা। এদের মধ্য ঐশী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। বাকিরা মানারাত ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। আকলিমা জেএমবির নারী ইউনিটের উপদেষ্টা।

র‌্যাব দাবি করেছে, ওই চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও ১০ সন্দেহভাজন নারী জেএমবি সদস্যের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়েছে। ওই দশজন হলেন, সাফিয়া ওরফে সানজিদা ওরফে ঝিনুক, মাইমুনা ওরফে মাহমুদা ওরফে লায়লা, তাসনুবা ওরফে তাহিরা, সায়লা ওরফে শাহিদা, সালেহা ওরফে পুতুল, দিনাত জাহান ওরফে নওমী ওরফে বানী, তানজিলা ওরফে মুন্নী, আলিয়া ওরফে তিন্নি ওরফে তিতলী, মনিরা জাহান ওরফে মিলি এবং ছাবিহা ওরফে মিতু।

র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির জানান, গত ২১ জুলাই জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলীয় আমির মাহমুদুল হাসান ওরফে হাসানকে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মেলে নারী জেএমবিদের সন্ধান। তিনি জানান, আকলিমা রহমান গত রমজানে ১২ হাজার টাকার তহবিল সংগ্রহ করে দিয়েছেন। এরপর থেকেই তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। তার তহবিল গঠনের সত্যতা যাচাই করতে র‌্যাব বিষয়টি কয়েক দফায় খতিয়ে দেখেছে। এরপর সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ১২ হাজার টাকার মধ্যে আট হাজার টাকার জোগান দেয় ঐশী। মৌ ও মেঘনা তাদের সহযোগী। চারজনকেই বুধবার ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

র‌্যাব সূত্রটি জানায়, জেএমবির নারী সদস্যরা নীরবে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা ইয়ানত সংগ্রহ, সংগঠনের প্রচারণা ও সদস্য সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বেছে নিয়েছে। গ্রুপ স্টাডির নামে মেয়েদের দলে ভেড়াচ্ছে তারা। জেএমবি’র অনেক নারী সদস্য মেধাবী হওয়ায় প্রাইভেট পড়ানোর নাম করেও সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পেয়েছি, তা ভয়াবহ। আমরা পুরো বিষয়টি কড়া নজরদারিতে রেখেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবকিছুই আমাদের নজরদারিতে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি আমরা তদন্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। অনুমতি পেলেই পুলিশের কাছ থেকে আমরা মামলা নিয়ে আসব। তখন এ বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে। তখন অনেক কিছু জানা যাবে।’