%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a7%9f%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%b2

হাঁটার ফুটপাত ছেড়ে দিতে দখলকারীদের কাছে ‘মিনতি’ করে তাতেও কাজ না হলে বুলডোজার চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে দু’দিনব্যাপী ‘চতুর্থ আরবান ডায়লগ ২০১৬’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।আরবান এনজিও ফোরাম, বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ যৌথভাবে এ ডায়লগের আয়োজন করেছে।ঢাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাছরীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ও হেবিটেট ফর হিউমানিটি বাংলাদেশ এর পরিচালক জন আর্মস্ট্রং।‘টুওয়ার্ডস হেলথি এ্যান্ড রেসিলিয়েন্ট সিটিস অর্থাৎ ‘সুস্থ ও প্রাণবন্ত শহর চাই’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের (সিইউএস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম।

কর্মশালায় মেয়র আনিসুল হক রাজধানীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে কঠোর বার্তা দেন।এর আগে তেজগাঁওয়ে সাত রাস্তা থেকে ফার্মগেইট-কারওয়ান বাজারমুখী সড়ক দখলমুক্ত করতে গিয়ে ট্রাক শ্রমিকদের রোষের মুখে পড়লেও সফল হয়েছিলেন আনিসুল হক। কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ফুটপাত থেকে দখলদার উচ্ছেদ খুবই কঠিন কাজ। তবে এরপরও ঢাকার সব ফুটপাত থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হবে।আমার লোকজনকে আমি বলেছি প্রথম দিন যাবা, হাতে ধরবা, বলবা স্যার আমার জায়গা ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় দিন যাবা, বলবা স্যার, আপনি অনেক বড়লোক, ফুটপাত বোধ হয় ভুলে দখল হয়ে গেছে, স্যার আপনি মনে হয় টের পান নাই, স্যার ছেড়ে দেন। তৃতীয় দিন গিয়া পায়ে ধরবা, বলবা গরিবের ফুটপাত স্যার ছেড়ে দেন। তাও না ছাড়লে চতুর্থ দিন গিয়া বুলডোজার চালাইয়া দিবা।

উই ডোন্ট কেয়ার। ইনশাল্লাহ আপনারা দেখবেন, উই উইল টেক আউট দিস।কর্মশালার প্রধান অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকে উদ্দেশ করে আনিসুল হক বলেন, মন্ত্রী মহোদয়কে এখনি বলছিলাম। এখানে তো প্রকাশ্যে বলতে পারব না, কারা দখল করে আছে।আনিসুল হক বলেন, একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত শহর প্রতিষ্ঠা করতে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে, যেগুলো চাইলেও অতিক্রম করা কঠিন।তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী তিন বছর সাত মাস পর তার মেয়রের দায়িত্ব ছাড়ার সময় ঢাকা একটি অন্যরকম শহর হবে।

নগর এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় আরবান ডায়লগ শীর্ষক দুই দিনের কর্মশালাটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ।একটি বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়তে হলে ঢাকার উপর থেকে চাপ কমাতে জোর দেন মন্ত্রী মোশাররফ। এজন্য ঢাকার বাইরের শহরগুলোয় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার তাগিদ দেন তিনি।ঢাকার বাইরে ভালো আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে ঢাকার ওপর চাপ কমবে।

সরকার বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পে ১ লাখ আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি করছে বলে জানান মোশাররফ হোসেন। এর ফলে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত লোকজন কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবে।গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য আধুনিক শহরে পরিণত করা হবে।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনটিই চান। আর এ ব্যাপারে তিনি বেশ আন্তরিক ও উদার।স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন আয়োজক ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক ফ্রেড উইটিভেন।গৃহায়ন মন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করতে সরকার বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা ও বালু নদীর পানি দুষণ মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।তিনি বলেন, সেই সাথে রাজধানীর স্যুয়ারেজের পানি স্ল্যুইফ সিস্টেমের মাধ্যমে পরিশোধন করে নদীতে ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।মোশাররফ হোসেন বলেন, পূর্বাচল হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে স্মার্ট সিটি। এ শহরের পয়ঃনিস্কাশন ও স্যুয়ারেজের লাইনের পানি শুরু থেকেই স্ল্যুইফ সিস্টেমের মাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে নদীতে পরবে।তিনি বলেন, পূর্বাচলে ১৪২ তলা বিশিষ্ট একটি আইকোনিক টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনাও তার সরকারের রয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান এস এম মাকসুদ কামাল, হ্যাবিটেট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ-এর পরিচালক জন আর্মস্ট্রং প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।