%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%b2%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0

হলুদের গুঁড়ায় রয়েছে কারকিউমিন নামে এক ধরনের যৌগ। এগুলো অনেকটা আলোর কণার (ফ্লুরেসেন্ট) মতো, যা বায়োইমেজ ( জৈব ছবি) তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এগুলো রোগ শনাক্তকারী ও প্রতিরোধী।এখন এই গুঁড়া থেকে কী করে ক্যান্সার রোগ নির্ণয় ও প্রতিষেধক আবিষ্কার করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সোবহান। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করছেন জার্মানির মেগডেবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফ্রাংক টি অ্যাডেলম্যান। শাবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এ গবেষণায় সহযোগিতা করছেন।

গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, ক্যান্সার হলে আক্রান্ত স্থানের কোষ দ্রুত বাড়ে। এটা টিউমার তৈরি করে, যা মানবদেহের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে কারকিউমিন হলো কাঁচা হলুদের গুঁড়ার মিশ্রণের অণু, যা রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্যমে আলাদা করা হয়। এ থেকে তৈরি নানা যৌগ ক্যান্সার কোষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে তাকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এতে ক্যান্সার নিরাময় ও রোধ করা সম্ভব।শাবিপ্রবি সূত্র জানায়, শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সম্প্রতি প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যানো বায়োইমেজিং ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এই ল্যাবে এখন নতুন উদ্যমে চলছে হলুদ নিয়ে গবেষণা। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, হলুদের কারকিউমিনে রয়েছে অ্যান্টিরিউমেটিক (বাতপ্রতিরোধক), অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল (জীবাণুনাশক), অ্যান্টিফাঙ্গাল (ফাঙ্গাসরোধক), অ্যান্টিওস্টিওরোপোরোটিক (হাড়ের ক্ষয়রোধক), অ্যান্টিভাইরাল (ভাইরাসনাশক) এবং এইচআইভিরোধক ক্ষমতা। এ ছাড়া কারকিউমিনে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হূদরোগ নিরাময়কারী উপাদান।

শাবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সোবহান বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আমরা গবেষণা করছি। ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের রয়েল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি তাদের কেমিক্যাল সোসাইটি রিভিউজ পত্রিকায় আমাদের গবেষণা নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ওই নিবন্ধের শিরোনাম ছিল কারকিউমিন যৌগ এবং রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে এদের প্রয়োগ। তিনি আরো বলেন, এশিয়া অঞ্চলের মানুষ তরকারির সঙ্গে প্রচুর হলুদ খায়। এ জন্য এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্যনালি, অন্ত্র ও কোলন ক্যান্সার তুলনামূলক কম হয়। তাই বলে অতিরিক্ত হলুদ খাওয়া মোটেই সমীচীন নয়। কারণ অতিরিক্ত কারকিউমিন আমাদের শরীর শোষণ করতে পারে না। এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে।ড. সোবহান আরো বলেন, গবেষণা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করছি। অন্যরাও চেষ্টা করছেন। আশা করি, এ গবেষণায় আমরা সফল হব।