%e0%a6%ae%e0%a7%8e%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%af-%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a7%87

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাংসদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হককে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফিজ উদ্দিন আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।দলের জেলা সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দেওয়ায় তাঁদের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার সহকারী একান্ত সচিব মিজানুর রহমান বলেন, স্যার ব্যস্ত আছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ছায়েদুল হক জেলা আওয়ামী লীগের কোনো সিদ্ধান্ত মানেন না। এ ছাড়া গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করে এবং জেলা আওয়ামী লীগকে সিদ্ধান্ত অমান্য করে পছন্দমতো প্রার্থী বাছাই করেছেন। এ জন্য দলের কার্যকরী সভায় সর্বসম্মতভাবে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।সূত্র জানায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো প্রকার সমন্বয় না করে ছায়েদুল হক একক ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করেন।

ইউপি নির্বাচনের সময় উপজেলার গুনিয়াউক ও হরিপুর ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ছায়েদুল হক ও তাঁর সমর্থকেরা অবস্থান নিয়েছিল। এমনকি তাদের পরাজিত করতে নানা চেষ্টা করেছেন। এ কারণে গত ২৫ জুনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছায়েদুল হককে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সময় রাফিজ উদ্দিনকেও কারণ দর্শানো হয়। কিন্তু ছায়েদুল হক কারণ দর্শানোর কোনো জবাব দেননি। ফলে শুক্রবার সন্ধ্যায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে তাকে উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর উদ্ধত আচরণ ও অশালীন শব্দে শোকজ নোটিশের জবাব দেওয়ায় সভায় রাফিজকে সাময়িক বহিষ্কার করে দ্বিতীয়বার শোকজ করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকারকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার জন্য সতর্ক করা হয়।সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়নন পরিষদ নির্বাচনে নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে রাজাকারপুত্র’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক মিয়াকে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ছায়েদুল হকের বিরুদ্ধে।গণজাগরণ মঞ্চ থেকে প্রকাশিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকারদের তালিকায় ফারুকের বাবা তাজুল ইসলাম ওরফে তাইজ উদ্দিনের নাম রয়েছে।

সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির জানান, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করে নাসিরনগর উপজেলায় এককভাবে প্রার্থী দেন সায়েদুল হক।মনোনয়ন দেওয়াসহ পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ মনোনীত গুনিয়াউক ও হরিপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের পরাজিত করানোর চেষ্টা, তাদের কর্মী সমর্থকদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করানোর ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বলে জানান মোকতাদির।কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দেননি। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে তাকে উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতির সুপারিশের প্রস্তাব করেন সদস্যরা। পরে সর্বসম্মতভাবে তা পাশ হয়।একই সঙ্গে তাকে দল থেকে বহিষ্কার ও মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণেরও দাবি জানানো হয় সভা থেকে, বলেন মোকতাদির।এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনসাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সহসভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল, সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি পৌর মেয়র নায়ার কবীর, সহসভাপতি শাহ আলম, যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু প্রমুখ।

Image : bdnews24