%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%9f-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%86

ভারত ও পাকিস্তানের বৈরিতার কারণে দুই দেশের ক্রিকেটের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে অনেকবার। ভারতের রাজনৈতিক নেতাগণ পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ভেঙে দেয়ার আহবানও জানিয়েছেন। কিন্তুভারত ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) কখনো প্রকাশ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ভেঙে ফেলার কথা বলেনি। কিন্তু এবার দেখা গেলো সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অবস্থান। পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেটীয় সম্পর্ক রাখতে চায় না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলো বিসিসিআই। ক’দিন আগে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, বিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর। কিন্তু এবার আরো এক কাঠি এগিয়ে গেলো তারা। পাকিস্তানের সঙ্গে শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং কোনো ধরণের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক রাখতে চায় না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলো।

এমন কি আইসিসি’র কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের গ্র“পপর্বে তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে চায় না। আর এ বিষয়ে তারা ইতিমধ্যে আইসিসিকে চিঠি দিয়েছে। আইসিসিকে অনুরোধ জানিয়েছে, তারা যেন কোনো টুর্নামেন্টে ভারত ও পাকিস্তানকে একই গ্র“পে না ফেলে। তবে গ্রুপপর্ব পেরিয়ে নকআউট পর্বে দুই দল এক হয়ে গেলে অগত্যা তারা খেলে যাবে বলে জানিয়েছে। সেটা হবে বাধ্য হয়ে। এভাবে তারা কুটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে একঘরে রাখার সঙ্গে ক্রিকেটেও একঘরে করে রাখতে চায়। প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে বারবার রাজনৈতিক সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি হলেও ক্রিকেট ছিল তাদের অন্তপ্রাণ। ক্রিকেটই বারবার তাদেকে কাছাকাছি এনে দিয়েছে। এমন কি অনেকে মনে করেন, দুই দেশের সব রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান দিতে পারে ক্রিকেট। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে বিসিসিআই তখন পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক নষ্ট করেনি। বরং দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করেছে। বরাবরই ক্রিকেট দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে মূল ভূমিকা পালন করেছে। ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাক-ভারত ম্যাচ দুই দেশকে কাছে আনে। পাকিস্তানের দর্শকদের ভিসা দেয় ভারত সরকার। প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী আসিফ আলী জারদারি ভারতে গিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ দেখেন। কিন্তু ভারত ক্রিকেট বোর্ড এবার যা করছে তা নজিরবিহীন। ইতিহাসে কখনো তারা এমন মনোভাব দেখায়নি। দুই দেশকে বারবার এক করেছে ক্রিকেট। কিন্তু এবার আর সেটা হচ্ছে না। বিসিসিআই-এর প্রধান অনুরাগ ঠাকুর রাজনৈতিক দলের নেতাদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে কথা বলছেন। অবশ্য অনুরাগ ঠাকুর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একান্ত আস্থাভাজন।

এমন কি ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র যুব দলের প্রধান তিনি। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সামনে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নেই। তবে আগামী বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তারা একই ‘বি’ গ্র“পে। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত একই গ্র“পে থাকতে চায় না। বিষয়টি নিয়ে বিসিসিআই-এর প্রধান অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানকে একঘরে করার যে কৌশল নিয়েছে তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে আমরা আইসিসিকে অনুরোধ করেছি- আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যেন ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে এক গ্রুপে না রাখা হয়। তবে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হলে আলাদা কথা। সেটা এড়ানো যাবে না।

প্রতিবেশি দেশের ক্রিকেট নিয়ে ভারত বোর্ডের এমন কঠোর মনোভাবের মধ্যে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা দেখাচ্ছেন সহনশীল মনোভাব। তারা মনে করছেন, ক্রিকেটই দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে দিতে পারে। পাকিস্তানের অফস্পিনার সাঈদ আজমল বলেছেন, অতীতেও ক্রিকেট সিরিজের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমেছে। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সাহায্য করেছে ক্রিকেট। তাই আমি মনে করি দু’দেশের মধ্যে ফের ক্রিকেট হওয়া উচিত। এছাড়া সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি টুইটারে বলেছেন, পাকিস্তান সব সময় শান্তিকামী দেশ। আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে কেন এত কঠোর মনোভাব? দুই দেশে যুদ্ধে নামলে দুই দেশের জনগণই সমান ক্ষতির মুখোমুখি হয়।