Nahid-Education Minister Visit Dhaka College-5

শেষ মুহূর্তে দায়িত্ব পাওয়ায় প্রস্তুতিতে চাপ পড়লেও জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা ঠিক সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ও অনিশ্চয়তায় না ভুগতে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।পরীক্ষা শুরুর মাত্র ১২দিন আগে গত বৃহস্পতিবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে উপানুষ্ঠানিক পত্র দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। ওই চিঠিতে এ দুই পরীক্ষা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার কথা বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজকের এ সংবাদ সম্মেলন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন খুবই অল্প সময় হওয়ায় আমাদের দিন-রাত খাটতে হবে। তবে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। কারণ, পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা ও ফলাফল যথাসময়ে হবে। এ নিয়ে যেন কেউ দ্বিধায় না থাকেন।আগামী ১ নভেম্বর শুরু হবে এ দুই পরীক্ষা। শেষ হবে ১৭ নভেম্বর। আগে সিদ্ধান্ত ছিল, চলতি বছর থেকেই অষ্টম শ্রেণি স্তরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা বোর্ডগুলোর মাধ্যমে হবে।এবার এ দুই পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২৪ লাখ ১০ হাজার ১৫ জন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনার সিদ্ধান্তের কারণে এবার জেএসডি-জেডিসি পরীক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে তারা ‘না’ বলে দেয়।এই পরীক্ষার দায়িত্ব আমাদের নিতে বলেছে। যেহেতু তারা (গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়) অপারগতা প্রকাশ করেছে, আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, এই পরীক্ষা আগের মতই নেব। আশা করছি এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।আগামী ১ থেকে ১৭ নভেম্বর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত আছে।অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নিতে বোর্ডগুলো প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ও সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তবে এটা ঠিক যে আমাদের চাপ বেশি পড়বে।

পরীক্ষার মাত্র দশ দিন বাকি থাকতে গত বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার জানান, প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত না হওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়িত না হওয়ায় এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার দায়িত্ব তার মন্ত্রণালয় নেবে না।মন্ত্রী সেদিন বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে। কারণ এই পরীক্ষা গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে হলে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত লাগবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, কেন তারা (গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়) এই সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়ে এখনও কথা বলার সুযোগ হয়নি, তাদের সঙ্গে কথা বলব।তবে এ ঘটনাটিকে সমন্বয়হীনতা বলে মানতে রাজি নন শিক্ষামন্ত্রী। কেন তারা (গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়) পরীক্ষা নিলেন না এটা তারাই বলতে পারবেন। এটা আমরা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছি যে আমাদের অভিজ্ঞতা আছে যা তাদের নাই।এ বছর দেশের দুই হাজার ৭৩৪টি কেন্দ্রে ২৪ লাখ ১০ হাজার ১৫ জন শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় বসবে। এর মধ্যে ১১ লাখ ২৩ হাজার ১৬২ জান ছাত্র এবং ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৩ জন ছাত্রী।আট বোর্ডের অধীনে এবার জেএসসিতে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ জন এবং মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে জেডিসিতে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭২ জন পরীক্ষা দেবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা কোনোভাবেই জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকবেন না, অনিশ্চয়তায় থাকবেন না। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে ফল দেওয়া হবে।তিনি বলেন, কেউ যেন কোনোভাবেই প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা না করেন। বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্যও মিথ্যা অপপ্রচার করে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না। পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে নকলমুক্ত পরিবেশে হবে। শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।