jhenaidah-jua-picঅবশেষে ঝিনাইদহ সদরে ৩০শে অক্টোবর রাত আনুমানিক ২:৩০ মিনিটের দিকে র‌্যাব-৬ ইউনিটের কঠোর অভিযানে ফার্নিচার মেলার নামে নগ্নভাবে পরিচালিত ১-১০ সহ সকল প্রকার জুয়া খেলা বন্ধ হল। এ সময় জুয়ার আসর থেকে টাকা মদ, জুয়া সামগ্রী ও জুয়া বোর্ডের কর্মচারী সহ ৯জন জুয়াড়ীকে আটক করেছে র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ।

জানাগেছে, ফার্নিচার মেলার নামে জুয়া খেলার অনুমতি না থাকায় ও মেলার অনুমতি শেষ হয়ে গেলেও অবৈধভাবে মেলা ও জুয়াখেলার কারনে এ অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব-৬ । এদিকে ১-১০ বোর্ডের টাকার অঙ্ক নির্ধারণ করা না গেলেও ক্যাম্পে গিয়ে সিজার লিষ্ট হবে বলে সাংবাদিককে জানান এক কর্মকর্তা।

তবে ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে ৪০০ গজ দুরে এমন প্রকাশ্যে জুয়া যেমন অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় তেমনি উন্মোচিত হয় আমাদের বিবেক।

উল্লেখ্য, থামছেই না ঝিনাইদহের জুয়াখেলা হতাশ জেলাবাসী ! ঝিনাইদহে মেলার মাঠে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে জমজমাট জুয়ার আসর সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ ! শিরোনামে বার বার পত্র পত্রিকা, নিউজ পোর্টল অয়েব সাইট, ফেসবুকে সংবাদ প্রকাশ হলেও বন্ধ হচ্ছিল না জুয়া খেলা।

ঝিনাইদহ জেলা শহরের পুরাতন জজ কোর্ট চত্তরে ফার্নিচার ও কসমেটিকস মেলার মাঠে প্রতি রাতে জমজমাট জুয়ার আসর বসছে। খেলা শেষে গভীর রাতে খালি হাতে বাড়ি ফিরে আসছেন জুয়ার নেশায় মত্ত মানুষ গুলো।

ঝিনাইদহে মেলার মাঠে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে জমজমাট জুয়ার আসরের সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, নিউজপোর্টাল, ফেসবুকে ঝড় উঠলেও থামেনি জুয়ার আসর বরং আরো ধুমছে চলছে। প্রশাসন কেন নির্বিকার এবিষয়ে বোধগম্য নয় ঝিনাইদহবাসীর।

পরিবারের শান্তি ভঙ্গ হলেও জুয়ার অর্থ নিয়ে পকেট ভারী করছে এক শ্রেনীর জুয়া ব্যবসায়ী। বিভিন্ন শ্রেণী পেশা ও বয়সের মানুষ আয়ের সব টাকা ঢেলে দিচ্ছে তাদের পাতা ফাঁদে। প্রশাসনের নিরবতায় পরিস্থিতি নাজুক আকার ধারন করেছে। অপর দিকে বিক্রি না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ফার্নিচার ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন ।

স্থানীয় সুত্র জানায়, দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মাসে জেলা শহরের পুরাতন জজ কোর্ট চত্তরে ফার্নিচার মেলার আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে চুড়ি মালা, কাঠের ফার্নিচার নিয়ে হাজির হন ব্যবসায়ীরা ।

দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখনো জমে উঠেনি মেলা। বিক্রি না হলেও রাত ১০টার পর থেকে জমজমাট জুয়ার আসরে জোয়াড়িদের ঢল নামছে। ফরগুটি, চরকা, ১/১০ খেলায় মেতে উঠছেন সব বয়সের মানুষ।

লাখ লাখ টাকার খেলা হচ্ছে সেখানে। মেলার মাঠ ঘুরে দেখা যায় জোয়ার আসরের আসপাশে নিষ্ঠার সাথে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। রিকসাচালক, ছাত্র, ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ টাকার খেলায় সেখানে মেতে উঠেছেন। দামী গাড়ি চড়েও গভীর রাতে দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন জুয়াড়িরা।

রিকসা চালক দিনভর যা কামায় করেছেন তা জুয়ার খেলায় হেরে নি:স্ব হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এতে করে অত্রাঞ্চলের গ্রাম, পাড়া মহল্লায় জুয়ার খেলার বিরুপ প্রভাব পড়েছে। জুয়ার খেলার মরণ নেশায় স্বর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার হতদরিদ্র মানুষও।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির জাহিদ হাসান লিপু জানিয়েছেন, আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ফার্নিচার ও কসমেটিকস মেলার অনমুতি দেয়া হয়েছে। জুয়া খেলার জন্য কোন প্রকার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে জোর দিয়ে জানান সুত্রটি ।

এদিকে মেলার আয়োজক সমিতির অন্যতম কর্ণধার রোকনুজ্জামান রোকন বলেছেন, আগের দিনগুলোর তুলনায় এখন আরো মেলা জমে উঠেছে।

তার দাবী জুয়ার আসরের কারনে মেলায় কোন প্রভাব পড়ছেনা। ইতিমধ্যে জুয়ার আসরে হামলার ঘটনা ঘটেছে মর্মে স্বীকার করার পরেও তার দাবী সব কিছু ঠিকঠাক মত চলছে।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেছেন মেলায় জুয়ার আসর বসছে কিনা জানা নেই তার। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য নিজে মেলার মাঠে যাবেন বলে জানান তিনি ।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি