%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%a3-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b2

রাজধানীর বাড্ডায় গারো তরুণীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আফসান রহমান ওরফে রুবেলের (২৬) ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।আদালত এলাকায় পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া বেলকে সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ নভেম্বর বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে পালিয়ে যান তিনি। বাড্ডা থানা-পুলিশ আজ তাঁকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে।আদালত আসামি রুবেলের কাছে জানতে চান, তাঁর কোনো আইনজীবী আছেন কি না। তিনি ‘না’ সূচক জবাব দিয়ে নিজেই শুনানি করেন। আদালতকে তিনি বলেন, পুলিশের মারধরের ভয়ে আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম। তাঁকে যেন রিমান্ডে না নেওয়া হয়, সে আবেদন জানান তিনি।আদালত শুনানি শেষে রুবেলের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বাড্ডা থানার এসআই বি এম মামুন মঙ্গলবার রুবেলকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী শুনানি শেষে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান। রুবেলের পক্ষে শুনানিতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তার জামিনেরও কোনো আবেদন হয়নি বলে জানান নজরুল।রুবেল উত্তর বাড্ডার মিশ্রীটোলা এলাকার মফিজ উদ্দিন ওরফে মফু মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ডাকাতির প্রস্তুতি, মাদকদ্রব্য ও সন্ত্রাসী ঘটনায় বাড্ডা থানায় আটটি এবং রামপুরা থানায় অস্ত্র আইনের একটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত।গত ২৫ অক্টোবর ঢাকায় হবু স্বামীর সামনে থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় এক গারো তরুণীকে। ওই ঘটনার পর ২৮ অক্টোবর বাড্ডা থানায় একটি মামলা হয়, যার প্রধান আসামি রুবেল।

ধর্ষণের ঘটনার ১৭ দিন পর গত ১১ নভেম্বর বিমানবন্দর স্টেশন এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় র‌্যাব।স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রোববার রুবেলকে পুরান ঢাকার আদালত পাড়ায় নেওয়া হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে নেওয়ার আগেই তিনি কৌশলে পালিয়ে যান বলে সেদিন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ওই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ প্রশাসন।এরপর মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে রুবেলকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (গণমমাধ্যম) মাসুদুর রহমান জানান।

আদালতে উপস্থিত বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, রুবেল পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল। হাতকড়া পরা অবস্থায় তিনি পালিয়েছিলেন। হাতকড়া ঢাকার জন্য তিনি এমন অবস্থা করেন যেন দেখে মনে হয়, তাঁর হাত ভেঙে গেছে। পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এই আসামি নিজের কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেননি। তবে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। সেই সূত্র ধরে বাড্ডা এলাকা থেকে তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

এ মামলায় ১১ নভেম্বর রুবেলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। পরদিন তাঁকে বাড্ডা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরানুল হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ১৩ নভেম্বর তাঁকে আদালতে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তিনি পালান।ঘটনার পর ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগ জানায়, ধর্ষণের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন রুবেল। তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাঁকে আদালতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি পালিয়ে যান। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য এসআই ইমরান ও কনস্টেবল দীপককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৫ অক্টোবর এক গারো তরুণী উত্তর বাড্ডার একটি মেসে তাঁর হবু স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তখন এলাকার সন্ত্রাসী রুবেল ও তাঁর সহযোগী ওই গারো তরুণীকে পাশের একটি বাড়িতে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।