ঢাকা টাঙ্গাইল ময়মনসিংহে জঙ্গি হামলার ছক

জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত এক নারী রবিবার গাজীপুর জেলা কারাগারে এক পুত্র সন্তান প্রসব করেছেন। তার নাম শাহনাজ আক্তার রুমি। আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় র‌্যাবের জঙ্গী বিরোধী অভিযানের সময় পাঁচতলা ভবন থেকে পড়ে নিহত নব্য জেএমবি’র আমির ও ’অর্থদাতা’ হিসেবে খ্যাত সারোয়ার জাহান ওরফে আব্দুর রহমানের স্ত্রী। কারাগারে নবজাতক ও তার মা দুজনেই সুস্থ আছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার সুভাষ ঘোষ জানান, শনিবার রাতে জন্মের পর থেকে মা ও ছেলে দু’জনেই সুস্থ্য আছে। রুমির সম্ভাব্য ডেলিভারি তারিখ ছিল ২৩ ডিসেম্বর। তাই তাকে চেক-আপ করতে হাসপাতালে নেয়া-আনার সুবিধার্থে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে গত ১০ নবেম্বর তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার রুমি হঠাৎ অসুস্থ্য হলে দুপুরে তাকে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে ফেরত পাঠানোর পর রাত একটার দিকে কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডে তার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নবজাতক ও তার মা দু’জনেই ওয়ার্ডে আছে এবং তারা সুস্থ্য আছে।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারা সুত্র জানান, আগের ঘরের চার বছরের একটি শিশুপুত্র নিয়ে রুমি আব্দুর রহমানকে বিয়ে করেন। এদিকে আব্দুর রহমানের স্ত্রীর ছাড়াছাড়ির পর ওই ঘরে থাকা ১১বছরের একটি কণ্যা শিশু ও ছয় বছরের একটি শিশুপুত্রকে নিয়ে রুমিকে বিয়ে করেন ।

প্রসঙ্গতঃ গত ৮অক্টোবর ঢাকার আশুলিয়ায় বাইপাইলের গাজীরজট বসুন্ধরারটেক এলাকার জঙ্গী আস্তানা মৃধাভিলায় র‌্যাবের অভিযানের সময় আব্দুর রহমান একটি পাঁচ তলা ভবনের বারান্দার গ্রীল কেটে লাফিয়ে পরে মারা যান। পরে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩০লাখ টাকা, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, নাইটভিশন বাইনোকুলার ও মোবাইল জ্যামার উদ্ধার করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় র‌্যাবের দায়ের করা অস্ত্র ও সন্ত্রাস দমন আইনে দুইটি মামলায় আসামি হলেন রুমি। র‌্যাব রুমিকে ওই বাসা থেকে তার চার বছরের শিশুপুত্র তাহমিদ হাসান ও রহমানের আগের ঘরের ১১বছরের কণ্যা আতিয়া হক এবং ছয় বছরের ছেলে জাওয়াদ হোসেনসহ আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে রুমিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি নিয়ে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে দুই ছেলেসহ রুমিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে এবং আতিয়া হককে গাজীপুরের ভোগড়া নারী ও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে সেফ হোমে) পাঠানো হয়। কিন্তু রুমি সাড়ে ৮মাসের উপরে সন্তান সম্ভবা হওয়ায় সুচিকিৎসা ও চিকিৎসকদের কাছে চেকআপে সুবিধার জন্য ১০নবেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। শাহনাজ আক্তার রুমি তার স্বামী আব্দুর রহমানের হাত ধরেই জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।